নরসিংদী-৩ (শিবপুর) আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া তিন প্রার্থী এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে অঙ্গীকার বাস্তবায়নের শপথ করেছেন। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) নরসিংদী জেলা শাখা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নিয়ে এই আয়োজন করে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটায় শিবপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এই অনুষ্ঠান হয়।
এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী মোট আট প্রার্থীর মধ্যে তিনজন জনগণের মুখোমুখি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা হলেন বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের মনজুর এলাহী, জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের আলমগীর কবির ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রতীকের মো. ওয়ায়েজ হোসেন ভূঁইয়া। এ সময় তাঁরা উপস্থিত জনগণকে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দেন।
আসনটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী অন্য প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের জহিরুল হক ভূঁইয়া, গণফোরামের উদীয়মান সূর্য প্রতীকের এ কে এম জগলুল হায়দার আফ্রিক, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আম প্রতীকের মো. আলতাফ হোসেন, জাকের পার্টির গোলাপ ফুল প্রতীকের মো. রাজীব হোসেন এবং সিংহ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান সাংসদ সিরাজুল ইসলাম মোল্লা।
সুজনের জেলা কমিটির সভাপতি মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রথমেই প্রার্থীদের উদ্দেশে অঙ্গীকারনামা পাঠ করেন জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হলধর দাস। সুজনের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মোর্শেকুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য স্বপন কুমার সাহা।
উপস্থিত প্রার্থীরা পঠিত অঙ্গীকারনামার সঙ্গে একমত হন এবং সবাই একসঙ্গে দাঁড়িয়ে হাতে হাত মিলিয়ে অঙ্গীকারনামা বাস্তবায়নের শপথ নেন। এ সময় করতালি দিয়ে উপস্থিত ভোটাররা তাঁদের অভিনন্দন জানান। উপস্থিত ভোটাররাও সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার শপথ নেন।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নান খান বলেন, দেশের রাজনীতি এখন আর অহিংস পর্যায়ে নেই। নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমেই কেবল গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা সম্ভব। প্রার্থীদের উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন করেন, এই নির্বাচনে বিজয়ী হলে সমাজের ধনী-গরিবের মধ্যকার বৈষম্য কমাতে উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না। স্থানীয় ব্যবসায়ী আরিফুল ইসলাম জানতে চান, সন্ত্রাস, মাদক, ইভ টিজিং বন্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মো. ওয়ায়েজ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, পাকিস্তানিরা ভোটের অধিকার দেয়নি বলেই একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ করতে হয়েছিল। আজ তার চেয়েও খারাপ অবস্থা। ভোটকে যারা ভয় পায়, তারাই দেশের এমন অবস্থা করেছে। নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘প্রহসন না করে সত্যিকার ভোটের আয়োজন করুন।’
আলমগীর কবির বলেন, ‘আমি শিবপুরবাসীর ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হতে পারলে এলাকার কর্মক্ষম বেকারদের জন্য কাজের সুযোগ তৈরি করব। একজন ব্যবসায়ী হিসেবে সরকারি ও ব্যক্তিগতভাবে এলাকার জনগণের উন্নয়নে কাজ করব এবং তাদের সুখে–দুঃখে সব সময় পাশে থাকব।’
বিএনপির প্রার্থী মনজুর এলাহী বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন নিয়ে আমাদের মনে অনেক প্রশ্ন আছে। এটি শুধু একটি নির্বাচন নয়, এটি গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলন। যত কিছুই হোক না কেন, আমরা নির্বাচনের মাঠেই থাকব।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই দেশ আমাদের সকলের। একক কোনো দল যদি মনে করে এই দেশ শুধুই তাদের, তা ঠিক হবে না।’
মন্তব্য
মন্তব্য করুন প্রথমআলো.কম এ
মন্তব্য নেই