আটকে গেল বিএনপির পাঁচজনসহ সাত প্রার্থীর নির্বাচন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮

ফাইল ছবিউচ্চ আদালতের আদেশের কারণে বিএনপির আরও পাঁচ প্রার্থীসহ মোট সাতজন প্রার্থী আসছে নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না। এই সাতজনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে দেওয়া নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।

এই সাত প্রার্থীর মধ্যে দুজন স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী)। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে সাতজনের পদত্যাগপত্র গৃহীত হওয়ার আগেই তাদের প্রার্থিতার বৈধতা নিয়ে করা পৃথক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন।

আদালতে রিট আবেদনকারীদের সাতজনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক, সঙ্গে ছিলেন সৈয়দা নাসরিন। তিন চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।

আটকে যাওয়া সাতজনের মধ্যে বিএনপির পাঁচ প্রার্থী হলেন জয়পুরহাট-১ আসনে মো. ফজলুর রহমান (জয়পুরহাট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান), রাজশাহী-৬ আসন মো. আবু সাঈদ চাদ (চারঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান), ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনে মো. মোসলেম উদ্দিন (আখাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান), ঝিনাইদহ-২ আসনে মো. আবদুল মজিদ (হরিণাকুণ্ডু উপজেলা চেয়ারম্যান) ও জামালপুর-৪ আসনে ফরিদুল কবির তালুকদার (সরিষাবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান)। এই পাঁচ আসনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট বা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের কোনো প্রার্থী নেই।

নির্বাচন আটকে যাওয়া আওয়ামী লীগ সমর্থক অপর দুই প্রার্থী হলেন ময়মনসিংহ-৮ আসনে মাহমুদ হাসান সুমন (ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান) ও রংপুর-১ আসন মো. আসাদুজ্জামান (গঙ্গাচড়া উপজেলা চেয়ারম্যান), যাঁরা দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন।

রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে তাঁদের পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়ায় রিটার্নিং কর্মকর্তা তাঁদের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন। এর বিরুদ্ধে তাঁরা আপিল করলে ইসি তাদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে। পদত্যাগপত্র গৃহীত হওয়ার আগেই প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণার বৈধতা নিয়ে রিট করা হলে হাইকোর্ট ইসির সিদ্ধান্ত তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন। ফলে এখন তাঁরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

কার প্রার্থিতা নিয়ে কে রিট করল
জয়পুরহাট-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী ফজলুর রহমানের প্রার্থিতার বৈধতা নিয়ে রিট করেন ওই আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামসুল আলম দুদু। জামালপুর-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী ফরিদুল কবির তালুকদারের প্রার্থিতা নিয়ে রিট করেন একই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. মুরাদ হোসেন। ঝিনাইদহ-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী মো. আবদুল মজিদের প্রার্থিতার বৈধতা নিয়ে রিট করেন ওই আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী তাহজীব আলম সিদ্দিকী। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনে বিএনপির মো. মোসলেম উদ্দিনের প্রার্থিতা নিয়ে রিট করেন একই আসনের ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী জসিম উদ্দিন। রাজশাহী-৬ আসনে বিএনপির মো. আবু সাঈদ চাদের প্রার্থিতা নিয়ে রিট করেন ভোটার কীর্তি আজাদ।

ময়মনসিংহ-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদ হাসান সুমনের (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) প্রার্থিতা নিয়ে রিট করেন ওই আসনের মহাজোটের প্রার্থী জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম। আর রংপুর-১ আসনে (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) মো. আসাদুজ্জামানের প্রার্থিতার বৈধতা নিয়ে রিট করেন একই আসনের মহাজোটের প্রার্থী ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা।

চার প্রার্থীর প্রতীক ধানের শীষ
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চার প্রার্থীর ধানের শীষ প্রতীক পরিবর্তন হচ্ছে। প্রতীক বরাদ্দ নিয়ে চারজনের করা পৃথক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ রিট আবেদনকারী চারজনকে ধানের শীষ প্রতীক দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আশরাফ আলী, আবু বকর সিদ্দিক, ফেরদৌস আলা আলফা, ফারজানা শারমিন, সৈয়দ তাজরুল হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন।
মানিকগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির এস এ জিন্নাহ কবীরের পরিবর্তে বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে খোন্দকার আবদুল হামিদ ডাবলুকে ধানের শীষ প্রতীক দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের মনজুরুল ইসলাম ওরফে বিমলের পরিবর্তে বিএনপির সদস্য অধ্যক্ষ কামরুন্নাহার শিরিনকে ধানের শীষ প্রতীক দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কামরুন্নাহার শিরিন বিএনপির চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী প্রায়ত ফজলুর রহমান পটলের স্ত্রী।
নওগাঁ-১ আসনে বিএনপির ছালেক চৌধুরীর পরিবর্তে মোস্তাফিজুর রহমানকে ধানের শীষ প্রতীক দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মোস্তাফিজুর নওগাঁ জেলা বিএনপির সহসভাপতি। আর বগুড়া-৩ আসনে আবদুল মুহিত তালুকদারের পরিবর্তে মাসুদা মমিনকে ধানের শীষ প্রতীক দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মন্তব্য

  • image

    AS Sakib

    ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে আর কত !?

  • image

    রিদওয়ান বিবেক

    ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    বিএনপি স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন দিলেই ভূমিধ্বস বিজয় পাবে।

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    বিএনপি এমনই একটা দল যাদের গুছিয়ে কিছু করার অভ্যাসই নাই। তাদের এত বড়বড় আইনজীবি অথচ প্রার্থীদের জন্য কোন নির্দেশনা নেই!

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    PM, MP , minsters, cricket captain all can participate in vote but I cannot Upozila chairmen, regined deputy register (Mrs Luna, Sylhet 2). What a level play ground!

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    বিবেক ভাই, দেইখেন ভুমি ধ্বসে আপনার পুরো দলটাই না মাটির নীচে চাপা পড়ে যায়।

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    বিএনপি এসব আসনে এখন স্বতন্ত্র কোনাে প্রার্থীকে সমর্থন দিলেও বিজয় পাবে। জনগণ এখন আওয়ামী সন্ত্রাস থেকে মুক্তি চায়। ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চায়। আওয়ামী লীগ তাই জনগণকে ভয় পায়। ভোটাধিকার কেড়ে নিতে চায়। অতীতেও নিয়েছে!

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    আওয়ামীলিগের এত ভয় কেন!

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    বিএনপির উচিত দলের যারা দলের বিরুধে রিট করেছে তাদের বহিষকার করা।

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    এভাবে আর কত দিন

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    প্রার্থী বাতিলের এখনও চলছেই?

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    এই নিয়ে সর্বমোট কতটি আসন ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী শূন্য হল? তালিকা চাই

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    পদত্যাগ পত্র গ্রহনের দায়িত্ব সরকারের। সরকার উদ্দেশ্যমূলক ভাবে গ্রহন না করলে প্রার্থীর কি করার আছে? পদত্যাগ পত্র দাখিল করাই যথেস্ট নয় কি? তাছাড়া গনপ্রতিনিধিরা সরকারী কর্মচারী নন যে তাদের পদত্যাগ গৃহীত হতে হবে! এ অযৌক্তিক বিধান পরিবর্তন করা দরকার।

  • image

    MUHAMMAD

    ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮

    This how wonderful level playing going on for opposition parties, I think no one from Awami league got refused by court or election commission

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮

    উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ না করলে নির্বাচনে অযোগ্য --- কিন্তু মন্ত্রী পদে থেকে সেই পদ থেকে পদত্যাগ না করলেও নির্বাচন করার যোগ্য = কি জানি ভাই - আইন তো মান্তেই হবে কিন্তু আইন কেডা বানায় ?

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮

    বিএনপি সহ ৭৫ এর পরে জন্ম নেয়া সকল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করলেই তো ল্যাঠা চুকে যায়

সব মন্তব্য