লড়াইটা শেষ পর্যন্ত কারও জন্যই সহজ হচ্ছে না। সিঙ্গাইর, হরিরামপুর ও সদর উপজেলার তিন ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মানিকগঞ্জ–২ সংসদীয় আসনে মহাজোটের প্রার্থীই আছেন তিনজন। আওয়ামী লীগের মনোনীত কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম। জাতীয় পার্টির এস এম আবদুল মান্নান এবং বিকল্পধারার গোলাম সারোয়ার। প্রচারের মাঠে তাঁরা সবাই সক্রিয়। অন্যদিকে ভোটারদের বিপুল সমর্থন থাকলেও ক্ষমতাসীন দলের নেতা–কর্মীদের হামলা–বাধার কারণে প্রচারকাজে সুবিধা করতে পারছেন না বিএনপির প্রার্থী মঈনুল ইসলাম খান।
এই সংসদীয় আসনের বিভিন্ন এলাকার ভোটার, সাধারণ মানুষ ও কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে।
মানিকগঞ্জ-২ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৬ হাজার ১৬১। বর্তমান সাংসদ মমতাজ বেগম আওয়ামী লীগ থেকে চূড়ান্ত মনোনয়ন পেলেও দলের স্থানীয় নেতা–কর্মীর একাংশের সহযোগিতা পাচ্ছে না। এই আসন থেকে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন দেওয়ান শফিউল আরেফিন। তাঁর অনুসারীরা নিষ্ক্রিয় বলে জানিয়েছেন দলের অপরাংশের নেতা–কর্মীরা।
এদিকে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির সাবেক সাংসদ আবদুল মান্নান লাঙ্গল মার্কা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁর অভিযোগ, স্থানীয় আওয়ামী লীগ–যুবলীগের কর্মীরা তাঁর প্রচারে গাড়িবহরে হামলা চালিয়েছেন। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে অভিযোগও দিয়েছেন।
মহাজোটের অপর প্রার্থী বিকল্পধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী গোলাম সারোয়ার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কুলা প্রতীকে। তাঁরও অভিযোগ, ক্ষমতাসীনেরা তাঁর পোস্টার ছিঁড়েছে। তবে এই তিন প্রার্থীই নিয়মিত মাঠে আছেন।
এই আসনে বিএনপির প্রার্থী মঈনুল ইসলাম খান সাবেক শিল্পমন্ত্রী শামসুল ইসলাম খানের ছেলে। বাবার মৃত্যুর পর ২০০৩ সালের উপনির্বাচনে তিনি এখান থেকে সাংসদ হয়েছিলেন। গতকাল শুক্রবার সিঙ্গাইরের চারিগ্রাম বাজার এলাকায় নিজ বাসভবনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী মমতাজ বেগমের কর্মী–সমর্থকদের হাতে তাঁর গাড়িবহর একাধিকবার হামলার শিকার হয়েছে। তাঁর নেতা–কর্মীরা মাঠে দাঁড়াতে পারছেন না। সকালে পোস্টার লাগালে বিকেলেই ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পুলিশি হয়রানি। সম্প্রতি সিঙ্গাইর উপজেলা সদরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে ভাঙচুর করে বিএনপির নেতা–কর্মীদের নামে মামলা করা হয়েছে।
সাংসদ মমতাজ বেগম অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। গতকাল তাঁর সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল, তিনি তখন সদর উপজেলার পুটাইল গ্রামে গণসংযোগ চালাচ্ছিলেন। বিএনপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ এনে তিনি বলেন, ‘তাঁরাই আমাদের প্রচার মাইক ভেঙেছে। বিজয়ের মাসে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে।’
দলের একাংশের সঙ্গে অন্তর্দ্বন্দ্বের বিষয়ে মমতাজ বলেন, ‘তাঁদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হয়েছে। কিছু ঝামেলা ছিল। এখন তাঁরা সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।’ এ ছাড়া মহাজোটের সঙ্গী জাতীয় পার্টি ও বিকল্পধারার প্রার্থীরা মাঠে থাকলেও ভোটে তাদের প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন মমতাজ বেগম।
অবশ্য মমতাজের এই দাবি অস্বীকার করে লাঙ্গল প্রতীকের আবদুল মান্নান বলেন, ‘প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ব্যাপারে তাঁর সঙ্গে কোনো কথাই হয়নি। কেন্দ্র থেকে এ ধরনের কোনো নির্দেশনাও আমি এখন পর্যন্ত পাইনি।’ একই সঙ্গে মমতাজের লোকজনের বিরুদ্ধে প্রচারকাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে তিনি বলেন, ‘আজ (শুক্রবার) সন্ধ্যায় সিঙ্গাইরের মানিকনগর এলাকায় আমার লোকজনের ওপর হামলা হয়েছে।’
আর বিকল্পধারার প্রার্থী কুলা প্রতীকের গোলাম সারোয়ার বলছেন, ‘এই আসনকে মহাজোট উন্মুক্ত ঘোষণা করেছে। সে হিসেবেই আমরা মাঠে আছি। ভোটারদের কাছে যাচ্ছি। যথেষ্ট সাড়াও পাচ্ছি।’
মহাজোটের তিন প্রার্থীর এই দ্বন্দ্বে কি বিএনপি প্রার্থী মঈনুল ইসলাম খানকে বিশেষ কোনো সুবিধা পাবেন? মঈনুল বললেন, ‘এই আসনে বিএনপির যে পরিমাণ সমর্থক আছে, তাতে ভোটাররা যদি কেন্দ্র পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, তাহলে আমাদের জয় সুনিশ্চিত। তাদের ভোটকেন্দ্রে আনাই আমাদের মূল লক্ষ্য। তবে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ভোটাররা ভোটকেন্দ্র পর্যন্ত যেতে পারবে কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারছি না।’
মন্তব্য
মন্তব্য করুন প্রথমআলো.কম এ
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
২২ ডিসেম্বর, ২০১৮
Mamtaz begum will be winner but not easy .
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
২২ ডিসেম্বর, ২০১৮
সারাজীবন চেস্টা করলেও খালি মমতাজ বেগম কেন আওয়ামীলীগের সব এমপিএ এ আসনে নির্বাচিত হতে পারবে না । যদি জনগন ভোট দিতে পারে ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
২২ ডিসেম্বর, ২০১৮
মানিকগঞ্জ -২ আসনে মমতাজ বেগম আসার পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী রা যে পরিমান উশৃঙ্খলতা ও জনমনে ভীতি তৈরী করেছে তা পুর্ববতী কোন সময়ে ছিল না । এ যেন গানের মনচে মাতাল নৃত্য ।
Jalal-ud-din
২২ ডিসেম্বর, ২০১৮
মমতাজকে না বলুন, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ মানিকগঞ্জের জন্য বিএনপির পাশে থাকুন ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
২২ ডিসেম্বর, ২০১৮
মমতাজ ও রশীদ বয়াতীর শিশ্যরা মানিকগঞ্জ কে মাতাল ও নেশাখোরের আখরা বানিয়ে ফেলবে । কিন্তু মানিকগঞ্জের তরুন সমাজ রুখে দেবে ইনশা আল্লাহ ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
২২ ডিসেম্বর, ২০১৮
Late Mr.Shamsul Islam -Father of Mr. Moinul Islam was sacked by Khaleda Zia for his corruption .Mr. Moinul Islam was not with his party member for last 10 years
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
২২ ডিসেম্বর, ২০১৮
BNP Jamayat will be defeated here.