পাবনা-১ (সাঁথিয়া ও বেড়ার একাংশ) আসনে এবার নীরব ভূমিকায় রয়েছে জামায়াত। জোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী আবু সাইয়িদের জন্য এখন পর্যন্ত মাঠে নামেনি দলটি। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দলের সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি হওয়ার পেছনে সাইয়িদের ভূমিকা ছিল বলে মনে করেন স্থানীয় জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। ফলে জামায়াতের কাছে ‘নিজামীর আসন’ হিসেবে পরিচিত পাবনা-১ আসনে ধানের শীষের সঙ্গে নেই জামায়াত।
আবু সাইয়িদ ১৯৭০, ১৯৭৩ ও ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে পাবনা-১ আসনে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ‘সংস্কারপন্থী নেতা’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়ায় ২০০৮ সালের নির্বাচনে তাঁকে বাদ দিয়ে বর্তমান সাংসদ শামসুল হক টুকুকে প্রার্থী করে আওয়ামী লীগ। এবারের নির্বাচনেও নৌকা প্রতীকের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন সাইয়িদ। মনোনয়ন না পাওয়ায় তিনি যোগ দেন গণফোরামে।
জামায়াতের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁদের দলের সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির আদেশ হওয়ার পেছনে আবু সাইয়িদের কিছুটা হলেও ভূমিকা ছিল বলে তাঁরা মনে করেন। কারণ, ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারপ্রক্রিয়া যখন শুরু করে, তখন নিজামীর বিরুদ্ধে সাক্ষী জোগাড় করতে আবু সাইয়িদ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তাঁদের মতে, এই আসনে জোট থেকে জামায়াতেরই কারও প্রার্থী হওয়া উচিত। কিন্তু সেটি না হওয়াতেও জামায়াতের নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ।
বেড়া উপজেলা জামায়াতের আমির আবদুল বাসেত খান বলেন, ‘জামায়াতের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা মনে করেন, নিজামী সাহেবের ফাঁসির ক্ষেত্র প্রস্তুত করার পেছনে ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী সাইয়িদ সাহেবের ভূমিকা ছিল। এ জন্য নেতা-কর্মীরা তাঁর পক্ষে মাঠে নামছেন না। তবে এ ব্যাপারে কেন্দ্র থেকে চূড়ান্ত যে সিদ্ধান্ত আসবে, সেই মোতাবেক আমরা কাজ করব।’
১৭ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার হন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির জহুরুল ইসলাম। গ্রেপ্তারের দুই দিন আগে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, পাবনা-১ আসনের নির্বাচন নিয়ে জামায়াত ভাবছে না।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, পাবনা-১ আসনে জামায়াতের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর হওয়া জামায়াতের সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামী এ আসন থেকে ১৯৯১ ও ২০০১ সালে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। এ আসনে বছরখানেক আগে জামায়াত তাদের প্রার্থী হিসেবে নিজামীর ছেলে নাজিবুর রহমানের নাম ঘোষণা করেছিল। পরে মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে তাঁর পরিবর্তে বেড়া উপজেলা আমির আবদুল বাসেত খানের নাম ঘোষণা করা হয়। কিন্তু মনোনয়নপত্র দাখিল করেন নাজিবুর রহমান ও আবদুল বাসেত খান দুজনেই। শেষ পর্যন্ত বাসেত খান মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিলেও নাজিবুর রহমান এখনো প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। তবে তিনি বিদেশে অবস্থান করায় তাঁর পক্ষে প্রচার-প্রচারণা কিছুই নেই বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী হিসেবে আবু সাইয়িদকে ইতিমধ্যেই বিএনপি বরণ করে নিয়েছে। গণসংযোগের সময় স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাঁর পাশে থাকছেন। কিন্তু জামায়াতের নেতা-কর্মীদের এখনো তাঁর পক্ষে দেখা যাচ্ছে না।
মন্তব্য
মন্তব্য করুন প্রথমআলো.কম এ
mintu marsh
২৩ ডিসেম্বর, ২০১৮
জামায়াত আর্দশবাদী দল। তারা সবসময় নিজেদের নেতার আনুগত্য করে।
MBUR
২৩ ডিসেম্বর, ২০১৮
নীতির আনুগত্য করে তারা
Deepak Eojbalia
২৩ ডিসেম্বর, ২০১৮
What a excellent love to Sayeed!