আলী আজমের বাড়ির সামনে সকাল-বিকেল কয়েক শ মানুষ অবস্থান করছেন। আসছেন-যাচ্ছেন, চা খাচ্ছেন। থেকে থেকে নৌকার স্লোগান তুলছেন। আর বিএনপির প্রার্থীর বাড়ির সামনে ৭-৮ জন পুলিশ, ফটক বন্ধ।
এ বাড়ি দুটোর চিত্রের মতোই এ আসনের প্রচারণার চিত্র। বিএনপির প্রার্থী বলছেন, তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। আর আওয়ামী লীগের প্রার্থী বলছেন, আগের কর্মকাণ্ডে বিব্রত হয়ে বিএনপির প্রার্থী নিজ থেকে বের হচ্ছেন না।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আলী আজম (মুকুল) দিন-রাত নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। সড়কের অলিতে-গলিতে তাঁর পোস্টার ঝোলানো। পথসভা ও উঠান বৈঠক করছেন নিয়মিত। সমানতালে চলছে মাইকিং ও লিফলেট বিলি।
এ আসনের অপর প্রার্থী হলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. ওবায়দুর রহমান। গ্রামে-গঞ্জে হাতপাখা ও নৌকার পোস্টার পাওয়া গেলেও ধানের শীষের পোস্টারের দেখা মেলেনি। দৌলতখান ও বোরহানউদ্দিন উপজেলার কমপক্ষে ৫০ জন ভোটার বলেন, ধানের শীষের পোস্টার দেখেননি। কেউ এখনো ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইতে আসেননি।
বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলেন, হাফিজ ইব্রাহিম দীর্ঘদিন এলাকায় ছিলেন না। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে তিনি বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাকিম উদ্দিন ঘাটে নামেন। তাঁর আসাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের কর্মীরা তাঁদের ওপর হামলা করেন। পরে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এরপর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বোরহানউদ্দিন থানায় দুটি মামলা করা হয়। ওই মামলায় বোরহানউদ্দিন ও দৌলতখান উপজেলার ৭৬৬ জনকে আসামি করা হয়। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তাঁদের অনেক নেতা-কর্মীর বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর করেছেন। পুলিশ অনেক বাড়ি গিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের খুঁজে আটক করেছে। এসব কারণে নেতা-কর্মীরা এলাকা থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী আলী আজম মুকুল বলেন, ২০০১ সালে হাফিজ ইব্রাহিম কারচুপি করে ক্ষমতায় এসেছেন। পরে তাঁর নির্দেশে বিএনপির কর্মীরা হত্যা, খুন ও সংখ্যালঘু পরিবারের ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন। বোরহানউদ্দিন-দৌলতখানের নির্যাতিত মানুষ হাফিজ ইব্রাহিমের কাছে হিসাব চাইছে। তাই লজ্জায় তিনি নিজ থেকে ঘরে অবরুদ্ধ হয়ে আছেন।
এদিকে হাফিজ ইব্রাহিম অভিযোগ করেছেন, ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট ও ডিবি পুলিশ সেজে বিএনপির নেতা-কর্মী ও তাঁদের আত্মীয়দের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
হাফিজ বলেন, বড় মানিকা ইউনিয়নের মাহাবুবউদ্দিন হাওলাদারের বাড়িতে ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট ও ডিবি পুলিশ সেজে তল্লাশি, ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত। বাড়িটি তাঁর নানাবাড়ি। গতকাল বেলা দুইটার দিকে একটি মাইক্রো যায়। ওই গাড়িতে ম্যাজিস্ট্রেট লেখা স্টিকার লাগানো ছিল। গাড়ির লোকজন ঘরের আসবাব ভাঙচুর ও লুটপাট করে। হাফিজ ঘটনাটি বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবদুল কুদ্দুসকে জানান।
এদিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাখাওয়াত হোসেন বলেন, তাঁর নেতৃত্বে ওই সময় কোনো তল্লাশি চালানো হয়নি।
জেলা প্রশাসক বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন।
মন্তব্য
মন্তব্য করুন প্রথমআলো.কম এ
Sabbir Hossain
২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮
জেলা প্রশাসক বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন। দেখুন, বিএনপির আরো কয়েকজনকে আটক করুন। এ যেন সিনেমা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮
সেনা নামার পরও!!!!!
Md Shakil
২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮
মুক্তির জন্য -ধানের শীষে ভোট দিন ।
Moazzma H
২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮
সব জায়গায় একই চিত্র । পোস্টার না লাগিয়েই বিএনপি বলছে, আমাদের পোস্টার ছিঁড়লে কেন, লাগিয়ে দাও! বলছে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সমান হয় নেই, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ঠিক করে দাও। হয়তো ভোট কেন্দ্রে পোলিং এজেন্টও দিতে পারবে না, বিএনপি-জামায়াতা-ঐক্যফ্রন্ট। হয়তো তারা এটাও দাবি করতে পারেন আমাদের পোলিং এজেন্ট দিয়ে দাও, তা না হলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হবে না!
Admiral General Aladeen
২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮
ভাই, রূপম সাহেব বুঝতে পারছে, আমিও পারছি। আশা করি আপনিও পারবেন। একটু চেষ্টা করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮
জেলা প্রশাসক বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন। কখন কবে আপনাদের সময় হবে?
শেখ সায়ফুল্লাহ
২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮
আমার এলাকায় এখন পর্যন্ত আমি বিএনপির কোন পোস্টার দেখিনি। আওয়ামীলীগের নির্বাচনী প্রচারনার কেন্দ্র প্রতি অলি, গলি, মোড়ে মোড়ে। গানের তোরে থাকাই যাচ্ছে না ঘরে। বাসায় এসে সকাল বিকাল ভোট চাইছে। একদল স্বাধীন ভাবে কাজ করছে, আরেক দল ঘরে বন্দী হয়ে আছে। খুব সুন্দর লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের খেলা চলছে!
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮
# গণতন্ত্র
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮
থাকতেই হবে নয়তো সিইসি’র লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবেনা।
তাসলিমা বেগম
২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮
এটাই হলো পুরো দেশের নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের চিত্র। আর মিথ্যা বলার ঢং-টাও ঠিক এমনই যেমনটা এই প্রতিবেদন আওয়ামী প্রার্থী গনমাধ্যমকে জানিয়েছেন
Admiral General Aladeen
২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮
গত নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি বলে যারা বিএনপিকে দোষ দিয়েছিলো আশাকরি এবার তারা বুঝতে পারছে কেন বিএনপি অংশ নেয়নি। এখন বলতে পারেন তাহলে এইবার অংশ নিচ্ছে কেন? নিচ্ছে কারণ যারা এতদিন বুঝেনি তাদের বুঝানোর জন্য।