হবিগঞ্জ-৩ (সদর, লাখাই ও শায়েস্তাগঞ্জ) আসনের বিএনপির প্রার্থী জি কে গউছসহ দলটির নেতা-কর্মীরা নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে গত শনিবার রাতে হামলা ও মারধরের শিকার হয়েছেন। শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, প্রার্থীসহ প্রচারণায় অংশগ্রহণকারীদের প্রায় আড়াই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। ওই দিন রাত সাড়ে ১১টায় বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করেন। এ ঘটনার ১২ ঘণ্টা পর গতকাল রোববার দুপুরে আওয়ামী লীগ উল্টো মামলা দিয়েছে বিএনপির ১০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হবিগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপির প্রার্থী ও হবিগঞ্জ পৌরসভার সদ্য পদত্যাগ করা মেয়র জি কে গউছ শনিবার রাত সাড়ে আটটায় শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা সদরে যান নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দলের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী। তাঁরা স্থানীয় ড্রাইভার বাজারে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। এ সময় হঠাৎ আওয়ামী লীগের ৪০ থেকে ৫০ জন নেতা-কর্মী লাঠিসোঁটা, কুড়াল, হকিস্টিক নিয়ে জি কে গউছসহ তাঁর দলের লোকজনের ওপর হামলা চালান। এ সময় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা জি কে গউছকে রক্ষা করতে গিয়ে বেধড়ক মারধরের শিকার হন। এতে আহত হন বিএনপির ২০ থেকে ২৫ জন নেতা-কর্মী।
হামলাকারীরা জি কে গউছকে বহনকারী একটি মাইক্রোবাস ও ২৬টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। এ সময় জি কে গউছ ও তাঁর লোকজন শায়েস্তাগঞ্জ বাজারে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নেন। এরপর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ওই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানটি অবরুদ্ধ করে রাখেন। জি কে গউছ এ সময় শায়েস্তাগঞ্জ থানার পুলিশ ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে মুঠোফোনে বিষয়টি জানান।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, খবর পাওয়ার পরও পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেনি। ওই দিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে টহলরত বিজিবির দল
ঘটনাস্থলে গিয়ে জি কে গউছসহ অন্যদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
এদিকে গতকাল দুপুরে শায়েস্তাগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক জিতু মিয়া লস্কর বাদী হয়ে হবিগঞ্জ সদর ও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির ১০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, শনিবার রাতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর এবং নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেন। শায়েস্তাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
হবিগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপির প্রার্থী জি কে গউছ প্রথম আলো বলেন, তিনি ও তাঁর লোকজন শান্তিপূর্ণভাবে শায়েস্তাগঞ্জ শহরে প্রচারণা চালিয়ে ফিরছিলেন। এ সময় হঠাৎ করে শায়েস্তাগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. ছালেক মিয়ার নেতৃত্বে ৪০ থেকে ৫০ জন লোক তাঁদের ওপর হামলা চালান। তাঁকে রক্ষা করতে গিয়ে হামলাকারীদের হাতে তাঁর ২৫ জন নেতা-কর্মী গুরুতর আহত হন। এ সময় তাঁর ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস ও নেতা-কর্মীদের ২৬টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এখন তাঁরা এ হামলার পর উল্টো মামলা দিয়েছেন তাঁদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার বাদী ছালেক মিয়া বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আবু জাহিরের প্রচারণা নিয়ে ওই সময় তিনি অন্যত্র ব্যস্ত ছিলেন। এ সময় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে আসেন। আবু জাহির বলেন, জি কে গউছ প্রশাসনিক অনুমোদন না নিয়ে শায়েস্তাগঞ্জে প্রচারণা চালান। এ সময় জি কে গউছ তাঁকে (ছালেক মিয়া) নিয়ে কটূক্তি করেন। জি কে গউছ প্রায় সময়ই নির্বাচনী প্রচারণার সময় তাঁকে নিয়ে কটূক্তি করে থাকেন। যে কারণে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়।
মন্তব্য
মন্তব্য করুন প্রথমআলো.কম এ
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮
উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮
ইহাই কি নির্বাচনের সুষ্ঠ পরিবেশ?
bablu
২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮
আমি ব্যক্তিগতভাবে কোন রাজনৈতিক দলের সমর্থক নই তবে বর্তমানে বাংলাদেশে যা ঘটছে তা বিশ্বে নজীরবিহীন বলেই মনে হয় !!!!! তবে এটাও আমাদের মনে রাখা উচিত যে, বিশ্বের মহা পরাক্রমশালীরাও ক্ষমতার জোরে বেশী দিন টিকে থাকতে পারেনি এবং ইতিহাসের বিচার এড়াতে পারে নি !!!!
Md Nasim Wahid
২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮
ইহাই আওয়ামী চেতনা
গোপাল বোষ
২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮
শেখ হাসিনার অধীনে এই নির্বাচনের কথা বাংলাদেশের মানুষ কোন দিনও ভুলবে না। এটা একটা উদাহরণ হয়ে থাকবে।
সচেতন নাগরিক
২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮
বাংলার মানুষ কে এভাবে অবরুদ্ধ করে তাদের স্বাধীনতাকে হরণ করা যাবে না। সময় থাকতে ভালো পথে আসেন, প্রতিহিংসার রাজনীতি ত্যাগ করে আলোর পথে আসুন। নির্বাচন নিয়ে আর ছেলে খেলা করবেন না। ধন্যবাদ।
md.mumun
২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮
আল্লাহ বাচিয়ে রাখলে, নাতি পুতিদের গল্প শোনানো যাবে।