সিনহার বাড়ি কর্মীশূন্য, সাগুফতার বাড়ি ভরপুর

আসাদুজ্জামান, লৌহজং (মুন্সিগঞ্জ) থেকে ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

বিএনপির প্রার্থী মিজানুর রহমান সিনহার বাড়িতে নির্বাচনী কোনো ব্যস্ততা নেই। লৌহজং, মুন্সিগঞ্জ, ২৪ ডিসেম্বর। ছবি: আসাদুজ্জামানগোলাপি রঙের দোতলা সুদৃশ্য বাড়ি। বাড়ির সামনের অংশে ফুলের বাগান। হলুদ রঙের গাদা ফুলের আধিক্য বাগান জুড়ে। বাড়ির ঠিক সামনে বসার স্থান। একখানা কাচের টেবিল। তবে বাড়ি আর বাগানের মতো জৌলুস নেই ধুলোমাখা টেবিলটায়। বাড়ির মালিক বিএনপির কোষাধ্যক্ষ মিজানুর রহমান সিনহা। তিনি মুন্সিগঞ্জ-২ (লৌহজং ও টঙ্গিবাড়ী) আসনে বিএনপির প্রার্থী।

সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র তিন দিন বাকি। বাড়িটি দেখে বোঝার উপায় নেই, এ বাড়ির কেউ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। বাড়ি ও আশপাশে কোনো পোস্টারও নেই। গত সোমবার লৌহজংয়ে গিয়ে দেখা যায় এ চিত্র।

বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী লেবু মিয়া জানালেন, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর মিজানুর রহমান সিনহা একদিনের জন্যও বাড়িতে আসতে পারেননি। বাড়ির সামনে কিংবা আশপাশের সড়কে মিজানুর রহমান সিনহার ধানের শীষের পোস্টার নেই? লেবু মিয়ার জবাব, ‘স্যার, চাইলেও আসতে পারছেন না। আসতে গেলে হামলা হয়। রোববারও স্যারের ওপর হামলা হয়েছে। স্যারের পোস্টার কে লাগাবে?’

এলাকা জুড়ে চোখে পড়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলির পোস্টার। লৌহজং, মুন্সিগঞ্জ, ২৪ ডিসেম্বর। ছবি: আসাদুজ্জামানওই বাড়ির সামনের সড়কে দেখা গেল এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সাংসদ সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলির পোস্টার। তবে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু কিছু জায়গায় ধানের শীষের পোস্টার চোখে পড়েছে।

মিজানুর রহমান সিনহার বাড়ির আরেকজন নিরাপত্তারক্ষী জানালেন, এ বাড়িতে বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী আসেন না। মিটিং হয় না। বাড়ির কাছের একটি চা দোকানের সামনে বিএনপির স্থানীয় এক নেতা অভিযোগ করেন, বিএনপির কেউ বাজারে নেই। প্রায় সব নেতাকর্মী গা ঢাকা দিয়ে আছেন। নিজের নাম প্রকাশে রাজি হননি স্থানীয় এই নেতা।

সিনহার বাড়ি হয়ে বালিগাঁও বাজারে আসার পথে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাগুফতার কয়েকটি নির্বাচনী প্রচারকেন্দ্র দেখা গেল। ক্যাম্পে ক্যাম্পে নির্বাচনী গান বাজছে। বালিগাঁও বাজার হয়ে পূর্ব বড়দিয়া থেকে দক্ষিণের শেষ গ্রামটির নাম শামুরবাড়ী। এ গ্রামে থাকেন সাংসদ সাগুফতা ইয়াসমিন। রাস্তায় রাস্তায় দেখা গেল সাগুফতার নির্বাচনী পোস্টার। সেখানে মিজানুর রহমান সিনহার পোস্টার দেখা যায়নি।

আওয়ামী লীগ প্রার্থীর প্রতীক বিশালকায় নৌকা আলোক সজ্জায় সজ্জিত করা। লৌহজং, মুন্সিগঞ্জ, ২৪ ডিসেম্বর। ছবি: আসাদুজ্জামানপদ্মার তীরে সাগুফতা যে বাড়িতে থাকেন (বাড়িটির ছবি তোলা হলেও তা মুছে ফেলতে বাধ্য করা হয়), সেই বাড়িতে ঢুকে উঠানে বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে পাওয়া গেল। তাঁদের একজন রাশেদুল ইসলাম। তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য। রাশেদুল বললেন, সাংসদ সাগুফতা নির্বাচনী প্রচারে বাইরে আছেন।

লৌহজং ও টঙ্গিবাড়ীর অনেক সড়ক ঘুরে দেখা গেল, প্রায় প্রতিটি বাজারে আছে সাগুফতার নির্বাচনী প্রচারকেন্দ্র। রাতে লৌহজংয়ের কনকসার বাজারে গিয়ে দেখা গেল সাগুফতার নির্বাচনী প্রচারকেন্দ্রে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। আর হলমার্কেট বাজারে নির্বাচনী প্রচারকেন্দ্রের সামনে টাঙানো নৌকাটিও আলো দিয়ে সাজানো।

বিচ্ছিন্নভাবে ধানের শীষের কিছু পোস্টার চোখে পড়ে। লৌহজং, মুন্সিগঞ্জ, ২৪ ডিসেম্বর। ছবি: আসাদুজ্জামানটঙ্গিবাড়ীর বালিগাঁও বাজারের এক চা দোকানি বললেন, ‘এবারের ভোট এক পাইলা (পক্ষের) ভোট। নৌকার লোকজন বাজারে। আর বিএনপির লোকজন আসে না। ভোট চায় না।’

লৌহজং উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওসমান গণি তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা নির্বাচনী পোস্টার শুরু থেকেই লাগাচ্ছেন না। তাঁরা পোস্টার না লাগালে দেখা যাবে কিভাবে? বিএনপির প্রার্থী নিজেইতো বাড়িতে আসেন না। গত রোববার বিএনপির প্রার্থীর ওপর হামলার প্রসঙ্গ তোলার পর ওসমান গণি বলেন, তিনি গভীর রাতে কেন এলাকায় আসবেন?

বিএনপির অঙ্গ সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের লৌহজং উপজেলার সাধারণ সম্পাদক শাহিন মৃধা বলেন, পোস্টার থাকবে কিভাবে? পোস্টার লাগাতে গেলেই হামলা চালানো হয়, পুলিশ গ্রেপ্তার করে। সিনহা সাহেবের ওপর দুবার হামলা হয়েছে—ভয়ে নেতাকর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

মন্তব্য

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

    কোন দেশে বসবাস করছি??

    • image

      নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

      ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

      যে দেশে অন্যের জনসভায় গ্রেনেড মারা হয় সেই দেশে।

    • image

      নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

      ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

      উন্নয়নের মহাসড়কে বাস করছি ভাই

    • image

      নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

      ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

      দেশের নাম আওয়ামী লীগ

    • image

      নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

      ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

      রাজাকার এবং জামাত বিহিন একটা দেশে বসবাস করতে চাই।

    • image

      নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

      ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

      "দেশের নাম আওয়ামী লীগ", হলেই বা সমস্যা কোথায়?

    • image

      নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

      ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৮

      অনেকে বলে রাজাকার বিহীন বাংলাদেশ চাই। আচ্ছা বলতে পারেন, ১৯৭১ সালে একজন রাজাকারের বয়স যদি ১৮ বছর হয়ে থাকে, ২০১৮ শেষে তার বয়স কত? ৬৬ বছর। এই ৬৬ বছরের বুড়ো কি হুমকি দেশের বলতে পারেন? শুধু শুধু দেশ কে বিভক্ত করেন কেন? আর যারা করে সেটা আসলে রাজনৈতিক ফায়দা লুটার জন্য, আমরা কেন এই ফাদে পড়ব?

  • image

    তাসলিমা বেগম

    ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

    এই নিউজটা লেমেনেটিং করে সিইসির গলায় ঝুলিয়ে দেয়া উচিত তাতেও যদি উনার আন্ধা চোখে কিছুটা আলো আসে

    • image

      নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

      ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

      ... CEC cannot speak freely.

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

    দেশতো ঠিকই ছিল। এখন পেট্রোল বোমার আঘাতে দেশটা রক্তাক্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে।

  • image

    Faruk Ahmmed

    ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

    A lot of thanks to Prothom Alo news paper for this true news.

  • image

    Masud Parvez

    ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

    ঐক্যফ্রন্ট নাকি দূর্ব্যবহার করছে, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন।

  • image

    ALAMGIR HAYDER

    ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

    THANKS PROTOHOM ALO

  • image

    Benyamin Mashroor

    ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

    Level playing field!!

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

    এই আওয়ামী....দের একদিন পতন হবে, আমি সেইদিনের অপেক্ষায়!

    • image

      SHAMEEM

      ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

      অপেক্ষায় থাকুন যে অপেক্ষার কোন শেষ নেই।

    • image

      নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

      ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

      May Allah bless you.

    • image

      MIADAD Haque

      ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৮

      অন্ধ হলে মানুষ অার সত্য দেখতে পায়না।

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

    প্রথম আলোর এক পেশে সংবাদ

    • image

      নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

      ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

      ভালো না লাগলেই একপেশে?

  • image

    MMKhan

    ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

    অথচ, বিক্রমপুর/মুন্সীগঞ্জ হচ্ছে বিএনপি তথা ধানের শীষের একান্ত আপন ঠিকানা, এক অচ্ছেদ্য দুর্গ।

  • image

    মহম্মদ সালাউদ্দিন

    ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

    এই বাড়িটার দাম তো মনে হচ্ছে কয়েকশো কোটি টাকা। এত টাকা সে পেল কোথা থেকে?

    • image

      নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

      ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৮

      না বুঝে অবান্তর এস্টিমেট দিলেন...........

  • image

    ahmed

    ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

    এই চিত্র বাংলাদেশের সর্বত্র ।বুকের ভিতর শূন্যতা অনুভব করলাম । আমরা কি এমন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম ? স্বৈরাচার সরকারের নির্বাচনও এর চেয়ে অনেক ভালো ছিল । হে আল্লাহ বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে ধৈর্য ধরার তৌফিক দান করুন ।

  • image

    Jahidul Islam

    ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

    চিটিংবাজি খবর। আমার রাজশাহীতে দিব্যি বিএনপি প্রার্থী হাসিনার গুষ্টি উদ্ধার করে নির্বাচনী প্রচার করে যাচ্ছে। এমনও কথা বলছে ভোটের পরদিন হাসিনা দেশ ছেড়ে পালাবে তারপরও তো মিজানুর রহমান মিনুকে কেউ একটি ধমকও দেয়নি।

  • image

    Aftab Ahmad

    ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৮

    What a House ? Palace

  • image

    moinul islam

    ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৮

    poster or publicity not going to matter much in this election.

  • image

    Saidur Rahman

    ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৮

    এ দেশে মনে হয়না আর সেই উৎসবমূখর পরিবেশে নির্বাচন হবে। ভোট নিয়েও জনগনের কোন আর ইনটারেষ্ট নাই।

সব মন্তব্য