১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ। নৌকা প্রতীক নিয়ে তিনি লাঙ্গলের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। এবারও তিনি এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে প্রতীক বদলে হয়েছে ধানের শীষ। গণফোরামে যোগ দিয়ে তিনি ঐক্যফ্রন্ট থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন।
একই অবস্থা বিরোধী শিবিরেও। ১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে এই আসনে জয়ী হন বিএনপির এম এম শাহীন। তখন তাঁর প্রতীক ছিল ধানের শীষ। এবারও তিনি সংসদ সদস্য প্রার্থী হলেও বদলে গেছে প্রতীক। তিনি নির্বাচন করছেন নৌকা প্রতীক নিয়ে। মহাজোটের শরিক বিকল্পধারায় যোগ দিয়ে তিনি এই প্রতীকে নির্বাচনের মনোনয়ন পেয়েছেন।
এলাকার প্রবীণ রাজনীতিবিদদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিকট অতীতে মৌলভীবাজার-২ আসনে সরাসরি নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীকের মধ্যে নির্বাচনী লড়াইয়ের নজির নেই। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হন জাতীয় পার্টির নওয়াব আলী আব্বাস খান (লাঙ্গল)। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ (নৌকা)। ১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ নির্বাচনে জয়ী হন আওয়ামী লীগের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ (নৌকা)। নিকটতম ছিলেন জাতীয় পার্টির নওয়াব আলী আব্বাস খান (লাঙ্গল)। ২০০১ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় বিএনপির ‘বিদ্রোহী’ এম এম শাহীন (ফুটবল) ও আওয়ামী লীগের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ (নৌকা)। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হন মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির নওয়াব আলী আব্বাস খান (লাঙ্গল)। নিকটতম ছিলেন বিএনপির ‘বিদ্রোহী’ এম এম শাহীন (ফুটবল)। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ বর্তমান সাংসদ আবদুল মতিন (আনারস)। নিকটতম ছিলেন মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির মহিবুল কাদির চৌধুরী (লাঙ্গল)।
এলাকার ভোটাররা বলছেন, ১৯৯১ সালের আগের নির্বাচনগুলোতেও নৌকা-ধানের শীষের লড়াই দেখা যায়নি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা ও ধানের শীষের প্রার্থীর মধ্যে লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এম এম শাহীন বিএনপির রাজনীতি করতেন। দলের মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ার আভাসে সম্প্রতি তিনি বিকল্পধারা বাংলাদেশে যোগদান করেন। যোগদানের পরপরই ওই দলের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য মনোনীত হন। মহাজোটের শরিক দলের প্রার্থী হিসেবে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর সুলতান মনসুর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এক-এগারোর পর দলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়। তিনি ঐক্যফ্রন্টের শরিক গণফোরামের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই আসনে অন্যান্যের মধ্যে জাতীয় পার্টির মাহবুবুল আলম, বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের মতিউর রহমান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পাটির প্রশান্ত দেব ও ইসলামী ঐক্যজোটের আসলাম হোসেনও ভোটযুদ্ধে রয়েছেন।
২৩ ও ২৪ ডিসেম্বর কুলাউড়ার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অন্তত ৫০ জন ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার নৌকা ও ধানের শীষের মধ্যেই লড়াইয়ের সম্ভাবনা বেশি। দুই প্রতীকের প্রার্থীই অতীতে একাধিকবার সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বিজয়ী হয়ে এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রেখেছেন। এলাকায় তাঁদের জনপ্রিয়তাও আছে। প্রতীকের পাশাপাশি নির্বাচনে এটারও প্রভাব পড়বে।
মন্তব্য
মন্তব্য করুন প্রথমআলো.কম এ
Azizul Hoque
২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮
আমার কি দোষ, আমি তো একই জায়গাতে আছি, পার্টি বদল হয়, মার্কা আসে আর যায় ।