একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ আজ রোববার সকাল আটটায় শুরু হয়েছে। চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত। এবারের ভোটে দেশের সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয় গত ৮ নভেম্বর। এরপর একবার পুনঃ তফসিল করা হয়। এর ফলে ভোটের তারিখ ২৩ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর করা হয়।
৩৯টি রাজনৈতিক দল অংশ নিলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে মূলত আওয়ামী লীগ (নৌকা) ও বিএনপির (ধানের শীষ) মধ্যে। ভোটে আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব দিচ্ছে মহাজোটের। ১৪ দলীয় জোটের নেতৃত্বেও আছে দলটি। আর বিএনপি আছে ২০ দলের নেতৃত্বে ও ড. কামাল হোসেনের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান শরিক হিসেবে। সাধারণ মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হলো, কারা পরবর্তী ৫ বছরের জন্য দেশ পরিচালনার দায়িত্ব আসছে, রাষ্ট্রক্ষমতায় আসছে।
এবারও কী বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ জিতছে না কি, তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি জিতবে—এমন নানামুখী আলোচনার উত্তর পাওয়া যাবে আজই। বিকেল চারটা পর্যন্ত ভোট গ্রহণের পর শুরু হবে ভোট গণনা। এবারই প্রথমবারের মতো ছয়টি আসনে ইভিএমে ভোট হচ্ছে। ইভিএমে ভোট হবে ঢাকা-৬, ঢাকা-১৩, চট্টগ্রাম-৯, রংপুর-৩, খুলনা-২ ও সাতক্ষীরা-২ আসনে। এসব আসনে ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল পাওয়ার কথা জানিয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তারা। তবে ব্যালটে ভোট হওয়া আসনগুলোর ফল পেতে কিছুটা সময় লাগবে। অবশ্য নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা আশা করছেন, রাত ১০ থেকে ১২টার মধ্যে পরবর্তী সরকার কারা গঠন করছে, সে সম্পর্কে জানতে পারবে সাধারণ মানুষ।
জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে একটি আসন (গাইবান্ধা-৩) ছাড়া বাকি ২৯৯টি আসনে রোববার ভোট গ্রহণ হবে। প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে এই আসনে ভোট গ্রহণের নতুন তারিখ আগামী ২৭ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের শেষ পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। সম্প্রতি ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকায় সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাঁরাই আবার ক্ষমতায় আসছেন। কেননা, জনগণ আওয়ামী লীগকেই চাইছে।
অন্যদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ভোটে কারচুপি না হলে তাঁরাই জিতবেন। তিনি ভোটকেন্দ্র পাহারা দিতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। তিনি বলেছেন, ‘সর্বাধিক সংখ্যক প্রার্থী এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। উৎসবমুখর ভোট হবে এটাই আশা।’ তিনি ভোটারদের নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে এসে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগের আহ্বান জানান।
ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে ৬ লাখ ৮ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, র্যাব, আনসার, কোস্টগার্ড, বিজিবি সদস্যরা রয়েছেন।
একনজরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন:
ভোটকেন্দ্র: ৪০ হাজার ১৮৩টি
ভোটকক্ষ: ২ লাখ ৭ হাজার ৩১২টি
মোট ভোটার: ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৭ জন
পুরুষ ভোটার: ৫ কোটি ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৩৬৫ জন
মহিলা ভোটার: ৫ কোটি ১৬ লাখ ৬৬ হাজার ৩১২ জন
অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা: ৩৯টি
মোট প্রার্থী: ১ হাজার ৮৬১ জন
রাজনৈতিক দলের প্রার্থী: ১ হাজার ৭৩৩ জন
স্বতন্ত্র প্রার্থী: ১২৮ জন
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ৬ লাখ ৮ হাজার:
ভোটকেন্দ্র ও নির্বাচনী এলাকায় সেনাবাহিনী ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিত ফোর্স সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৮ হাজার। এর মধ্যে পুলিশ প্রায় ১ লাখ ২১ হাজার, আনসার প্রায় ৪ লাখ ৪৬ হাজার, গ্রাম পুলিশ প্রায় ৪১ হাজার। সেনাবাহিনী (প্রতি প্লাটুনে ৩০ জন) ৩৮৯টি উপজেলায় ৪১৪ প্লাটুন, নৌবাহিনী ১৮টি উপজেলায় ৪৮ প্লাটুন, কোস্টগার্ড (প্রতি প্লাটুনে ৩০ জন) ১২টি উপজেলায় ৪২ প্লাটুন, বিজিবি (প্রতি প্লাটুনে ৩০ জন) ৯৮৩ প্লাটুন, র্যাব (প্রতি প্লাটুনে ৩০ জন) প্রায় ৬০০ প্লাটুন ভোটের মাঠে নিয়োজিত আছে।
এ ছাড়া মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের সংখ্যা (র্যাবসহ) প্রায় ২ হাজার প্লাটুন (প্রায় ৬৫ হাজার), এ ছাড়া সারা দেশে জেলা ও মেট্রোপলিটনে পুলিশের টহল দল নিয়োজিত রয়েছে।
নির্বাচনে নিয়োজিত ১ হাজার ৩২৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মধ্যে আচরণবিধি প্রতিপালনের জন্য ৬৫২ জন, অবশিষ্ট ৬৭৬ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মোবাইল/স্ট্রাইকিং ফোর্সের সঙ্গে নিয়োজিত রয়েছেন। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৬৪০ জন, ১২২টি ইলেকট্রোরাল ইনকোয়ারি কমিটিতে ২৪৪ জন।
ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা
এবার ভোটে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে ৬৬ জন দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে দুজন বিভাগীয় কমিশনার এবং ৬৪ জন জেলা প্রশাসক।
নির্বাচনে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ৪০ হাজার ১৮৩ জন, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ২ লাখ ৭ হাজার ৩১২ জন এবং পোলিং অফিসার ৪ লাখ ১৪ হাজার ৬২৪ জন।
পর্যবেক্ষক
নির্বাচনে দেশি ৮১টি পর্যবেক্ষক সংস্থার ২৫ হাজার ৯০০ জন এবং ওআইসি ও কমনওয়েলথ থেকে আমন্ত্রিত ও অন্যান্য বিদেশি পর্যবেক্ষক ৩৮ জন, কূটনৈতিক/বিদেশি মিশনের কর্মকর্তা ৬৪ জন এবং বাংলাদেশে দূতাবাস/হাইকমিশন বা বিদেশি সংস্থায় কর্মরত বাংলাদেশি ৬১ জন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন।
বিধিনিষেধ
নির্বাচন উপলক্ষে শনিবার মধ্যরাত (রাত ১২টা) থেকে ভোটের দিন দিবাগত মধ্যরাত (রাত ১২টা) পর্যন্ত বেবিট্যাক্সি/অটোরিকশা/ইজিবাইক, ট্যাক্সি ক্যাব, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, কার, বাস, ট্রাক, টেম্পোসহ স্থানীয় যন্ত্রচালিত যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। একই নিষেধাজ্ঞা রয়েছে নৌযান চলাচলের ওপর।
এ ছাড়া ভোট সামনে রেখে শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাত (রাত ১২টা) থেকে ১ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাত (রাত ১২টা) পর্যন্ত মোট চার দিন সারা দেশে মোটরসাইকেল চালানোয় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে ইসির স্টিকার লাগানো মোটরসাইকেল এই নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে।
যান চলাচলের নিষেধাজ্ঞার সময় রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাঁদের নির্বাচনী এজেন্ট, দেশি-বিদেশি, পর্যবেক্ষকদের (পরিচয়পত্র থাকতে হবে) ক্ষেত্রে শিথিলযোগ্য। এ ছাড়া নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত সাংবাদিক (পরিচয়পত্র থাকতে হবে), নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, নির্বাচনের বৈধ পরিদর্শক ও কতিপয় জরুরি কাজ যেমন অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডাক, টেলিযোগাযোগ ইত্যাদির কাজে নিয়োজিত যানবাহনে নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।
এ ছাড়া মহাসড়ক, বন্দর ও জরুরি প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন বলে নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মন্তব্য
মন্তব্য করুন প্রথমআলো.কম এ
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮
নোয়াখালী বিভাগ চাই
Md Nasim Wahid
৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮
F...R...E...E...D...O...M
Sara Morgan
৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮
Controlled election. Under the surveillance of Police league, EC league, and local AL thugs! Though there is no guarantee of credible and fair election, peoples’ combined efforts can vanquish the fascist! Let’s see who win the people or the fascists!
নবীন
৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮
১৫ আগষ্ট করে যে মিথ্যার ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল বাংলাদেশের মানুষের উন্নতি সমৃদ্ধি লুটে জাতিকে ধাবিয়ে রেখেছিল যুগের পর যুগ আজ তার ফাসি হচ্ছে। অসৎ রাস্তায় অনেক দুর এগোনো যায় কিন্তু করুন পরাজয় তাকে বরন হয় আর সৎ রাস্তায় যত কাটাই আসুক, যত ষরযন্ত্র আর হামলাই আসুক একদিন আল্লাহর রহমত জয়ের মালা তার জন্য অপেক্ষা করেছে আজ তাই হচ্ছে
Azizul Hoque
৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮
Good Morning !
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮
ঠিক আটটায় উদয়ন স্কুল কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিলাম। ফেরার পথে দেখলাম নীলক্ষেতের কাছে গণতন্ত্র গেটের নিচে একজনকে বেধড়ক পেটানো হচ্ছে। একপাশে নিউমার্কেট থানা, অপর পাশে পুলিশ ফাঁড়ি। কাছে দাড়িয়ে তারা তামাশা দেখছে।
Jamshed Patwari
৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮
জীবনে প্রথম সকাল সকাল দিলাম, আমাদের কেন্দ্রে আমিই প্রথম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮
Election result is already set.
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮
আমার প্রথম ভোট ।দিলাম কেন্দ্রঃ দ্বিগুন প্রাইমারী স্কুল, মীরপুর ১২। সব আওয়ামী এজেন্ট। ধানের শীষের কোন এজেন্ট নাই। প্রিজাইডিং অফিসারকে (প্রিন্সিপাল অফিসার, ব্যাংক) জিজ্ঞেস করলে বললো, এজেন্ট না আসলে আমি কি করবো। তার চোখে মুখে এক ধরনের ভয়ের ছায়া দেখলাম। আমার ভোট কাউন্ট হবে কিনা যথেস্ট সন্দেহ রয়েছে।
দাউদ দস্তগীর
৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮
দুরাচার দূর হোক।
শহিদুল্লাহ আল ফারুক্বী
৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮
বিএনপির পোলিং এজেন্ট বের করে দেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ কেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট ঢুকতেই দেওয়া হয়নি। আওয়ামীলীগের পোলিং এজেন্টরা ব্যালট কেড়ে নিয়ে নিজেরাই সীল মেরে দিচ্ছে। অথবা তাদের সামনে সীল মারতে বাধ্য করতেছে। অন্যথায় নাম তালিকায় উঠে যাচ্ছে পরবর্তী ৫ বছর দৌড়ানি দেওয়ার খাতায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮
প্রহসনের নির্বাচন চলছে। ভোট দিতে পারলাম না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮
যশোর এম এম কলেজ কেন্দ্রে এখনই সব ভোট দেওয়া হয়ে গেছে, ভোটাররা ভোট দিতে গেলে কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না, বলা হচ্ছে বাড়ি যাও ভোট রাতেই হয়ে গেছে
দাউদ দস্তগীর
৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮
ঘৃণিত দল আওয়ামী লীগ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮
মিথ্যা কথা . আমি ঐ কেন্দ্রে সকাল ১০টায় ভোট দিয়ে আসলাম।
শিপন England
৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮
জিতবে জনতা জিতবে দেশ উন্নয়ন এর বাংলাদেশ জিতবে জনতা জিতবে দেশ শান্তি থাকবে বাংলাদেশ
দূরন্ত পথিক
৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮
এবার ক্ষমতায় আসলে আপনার প্রথম কাজ হবে ব্যাংকিং সেক্টরের দূর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা। ২-৩ তা সেক্টর ছাড়া বাকি সেক্টরগুলিতে খুব ভালো করেছেন। আশা করি আবার বিজয়ী হবেন এবং নিজ দলের চাটুকারীদের থেকে সতর্ক থাকবেন। বিরুধী মতের প্রতিও আরো সহনশীল আচরণ করবেন।