ভোটের সহিংসতায় ঝরল ১৩ প্রাণ

অনলাইন ডেস্ক ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

ভোটকেন্দ্রের বাইরের ডোবায় ভাসছিল ব্যালট বাক্স। শরীফপুর ইউনিয়ন, মুরাদপুর, বেগমগঞ্জ, নোয়াখালী, ৩০ ডিসেম্বর। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশনির্বাচনী সহিংসতায় দেশের ১০ জেলায় এ পর্যন্ত ১৩ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সাধারণ ভোটার যেমন আছেন, তেমনি আছেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও ইসলামী ছাত্রসেনার কর্মীও। রাজশাহীতে দুজন, চট্টগ্রামে দুজন, কুমিল্লায় দুজন এবং কক্সবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাঙামাটি, নরসিংদী, বগুড়া, গাজীপুর ও সিলেটে একজন করে নিহত হয়েছেন।

আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

রাজশাহী: রাজশাহীতে নির্বাচনী সহিংসতায় আজ রোববার দুজন প্রাণ হারিয়েছেন। রাজশাহীতে ভোট গ্রহণ চলাকালে বিভিন্ন আসনে সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ২২ জন আহত হয়েছেন। তাঁরা সবাই হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

মোহনপুরের পাকুড়িয়া হাইস্কুল কেন্দ্রের সামনে মেরাজউদ্দিন (২২) নামের আওয়ামী লীগের এক কর্মীকে বিএনপির কর্মীরা পিটিয়ে হত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। রাজশাহী জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুর রাজ্জাক খান বলেন, মোহনপুরে বিএনপির কর্মীরা আওয়ামী লীগের ওই কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন।

এদিকে, রাজশাহী-১ আসনে মোহাম্মদপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়ে বিএনপির কর্মীদের লাঠির আঘাতে মোদাচ্ছের আলী (৪৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। আজ দুপুর সোয়া ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। মোদাচ্ছেরের বাড়ি রাজশাহীর তানোর উপজেলার মোহনপুর গ্রামে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে ভোট দেওয়ার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন মোদাচ্ছের। এ সময় মোহাম্মদপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটকেন্দ্রে ঝামেলা শুরু হয়। বিএনপির কর্মীদের লাঠির বাড়িতে মাথায় আঘাত পান মোদাচ্ছের। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান তিনি। রাজশাহী জেলার সহকারী পুলিশ সুপার আবদুর রাজ্জাক খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

চট্টগ্রামের পটিয়ায় নির্বাচনী সহিংসতায় প্রাণ হারান আবু সাদেক নামের একজন। ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে মা সুলতানা বেগমের আহাজারি। পটিয়া, চট্টগ্রাম, ৩০ ডিসেম্বর। ছবি: জুয়েল শীলসকাল সাড়ে নয়টার দিকে দুর্গাপুরের (রাজশাহী-৫) বখতিয়ারপুর গ্রামে ভোট দিতে যাওয়ার সময় দুর্বৃত্তদের হামলায় একই পরিবারের ছয়জন আহত হন। তাঁরা হলেন বখতিয়ারপুর গ্রামের মনিরুজ্জামান (২৯), তাঁর বাবা আফসার আলী (৫৫), মা মনোয়ারা বেগম (৪৭), ভাই আরিফুজ্জামান (২২), বোন জেসমিন নাহার (৩২) ও মামি রুনুফা বেগম (৩৫)। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আফসার আলী ছাড়া বাকি পাঁচজনকে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। পরে তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাঁরা সবাই বখতিয়ারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে যাচ্ছিলেন।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরের (রাজশাহী-২) অন্নদাসুন্দরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের বাইরে বিএনপি কর্মীরা ভোটারদের স্লিপ দিচ্ছিলেন। এ সময় দুর্বৃত্তরা তাঁদের কয়েকজনের মাথায় চেয়ার দিয়ে আঘাত করে। এতে পাঁচ-ছয়জন আহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় বেলাল উদ্দিন ও মাসওয়ার আলীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

সকাল ১০টার দিকে নওহাটার (রাজশাহী-৩) পূর্বপাড়ার পুঠিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে এসে দুর্বৃত্তদের ককটেল হামলার শিকার হন হাবিব মিয়া (৪৫)। তিনি পেশায় স্বর্ণকার। তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের পটিয়া ও বাঁশখালীতে নির্বাচনী সহিংসতায় দুজনের প্রাণহানি হয়েছে। নিহত আবু সাদেক পটিয়ার এবং আহমেদ কবির বাঁশখালীর বাসিন্দা।

পটিয়া উপজেলার ঝিরি এলাকায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আবু সাদেক নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। তিনি ইসলামী ছাত্রসেনার সদস্য ছিলেন। আজ সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পশ্চিম) আফরুজুল হক চৌধুরী এর সত্যতা নিশ্চিত করেন। চট্টগ্রাম-১২ আসনে বিএনপির প্রার্থী এনামুল হকের বাড়ির কাছে এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে বাঁশখালীর কাঠারিয়া ইউনিয়নের বরইতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে গতকাল শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে তিনটার মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এত একপক্ষ ছিল জাতীয় পার্টি, জামায়াত ও বিএনপির জোট এবং আরেক পক্ষ ছিল আওয়ামী লীগ। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় দুই পক্ষই পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এ সময় আহমেদ কবির গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। তখন পুলিশের দুটি অস্ত্র খোয়া যায়। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) এমরান ভূঁইয়া ঘটনাস্থলে গিয়ে মাইকিং করিয়ে অস্ত্রগুলো স্থানীয় চৌকিদারের কাছে জমা দিতে বলেন। আজ সকাল ১০টার দিকে অস্ত্র দুটি উদ্ধার করা হয়।

কুমিল্লা: চান্দিনা ও নাঙ্গলকোটে আজ দুজন নিহত হয়েছেন। চান্দিনায় পুলিশের গুলিতে মজিবুর রহমান (৩৮) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আর নাঙ্গলকোটে ভোট দিতে যাওয়ার সময় হেলমেট পরিহিত লোকজনের হকিস্টিকের আঘাতে বাচ্চু মিয়া (৫৫) নামের বিএনপির এক স্থানীয় নেতা নিহত হয়েছেন।

নরসিংদীর শিবপুরের কুন্দারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সহিংসতায় প্রাণ হারান মিলন মিয়া। তাঁর মৃত্যুর খবর শুনে মা, স্ত্রী ও মেয়ের কান্না। ছবি: প্রথম আলোচান্দিনা উপজেলার পশ্চিম বেলাস্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে পুলিশের গুলিতে মজিবুর রহমান নিহত হয়েছেন। এ সময় মিজানুর রহমান নামের আরেক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মজিবুর রহমানের বাড়ি মুরাদনগর উপজেলার লাজুর গ্রামে। তিনি চান্দিয়ায় পোলট্রি ফিডের গোডাউনের শ্রমিক ছিলেন।

মজিবুর রহমানের স্ত্রী শাহনাজ আকতার বলেন, ‘আমরা চান্দিয়ায় ভাড়া থাকি। এখানকার ভোটার। সকালে ভোট দিতে গিয়েছিলাম। এ সময় অতর্কিতভাবে একদল সন্ত্রাসী এসে ভোটকেন্দ্র থেকে ব্যালট পেপার নিয়ে যায়। বাইরে ব্যালটবাক্স ভাঙচুর করে। এ সময় ধানের শীষ ও নৌকা প্রার্থীর অনুসারীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।’

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শটগানের ১২টি গুলি ছোড়ে। এ সময় মজিবুর রহমান ও মিজানুর রহমান গুলিবিদ্ধ হন। তাঁদের দ্রুত চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মজিবুর রহমানকে মৃত ঘোষণা করেন। মিজানুরকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

কেন্দ্রের সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা প্রদীপ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, অতর্কিতভাবে একদল সন্ত্রাসী লাঠিসোঁটা ও ককটেল এনে কেন্দ্রে হামলা চালায়। বিদ্যালয়ের ভাঙচুর চালায়। দুটি ব্যালট বাক্স মাঠের মধ্যে ভেঙে ফেলে। চারটি নিয়ে যায়। খবর পেয়ে বিজিবি, পুলিশ ও ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনে আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে এই ব্যালট বাক্স এই দুই যুবক উদ্ধার করে কেন্দ্রে পৌঁছে দেন। বেলা ১১টার দিকে তোলা ছবি। ছবি: শাহাদৎ হোসেন।

কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির ভূঁইয়া বলেন, এ কেন্দ্রে ২ হাজার ৯৭২ ভোট রয়েছে। এর মধ্যে সংঘর্ষের আগ পর্যন্ত ৬২৪টি ভোট গ্রহণ করা হয়। এখন কেন্দ্রের মধ্যে একটি অতিরিক্ত ব্যালট বাক্স ছাড়া আর কোনো বাক্স নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ এস এম জাকারিয়া আপাতত ভোট গ্রহণ স্থগিত করার নির্দেশ দেন।

এদিকে নাঙ্গলকোট উপজেলার মুরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে যাওয়ার সময় হেলমেটধারী লোকজনের হকিস্টিকের আঘাতে বাচ্চু মিয়া নিহত হন। তিনি নাঙ্গলকোট উপজেলায় দোলখার ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপির সহসভাপতি।

বিএনপির কর্মীরা অভিযোগ করেন, আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে মুরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বিএনপির নেতা-কর্মীর ভোট দিতে যাচ্ছিলেন। এ সময় হাতে হকিস্টিক ও মাথায় হেলমেট পরা একদল দুর্বৃত্ত তাদের ওপর হামলা চালায়। তখন বাচ্চু মিয়া ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন তাঁদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। বাচ্চু মিয়ার মাথায় হকিস্টিক দিয়ে আঘাত করে দুর্বৃত্তরা। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আনোয়ার হোসেনের পিঠে ও বুকে হকিস্টিক দিয়ে আঘাত করে। দ্রুত তাঁদের পার্শ্ববর্তী মনোহরগঞ্জ উপজেলার একটি ক্লিনিকে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক বাচ্চু মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার জন্য বিএনপির প্রার্থী মনিরুল হক চৌধুরীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট সৈয়দ সায়না ফেরদৌস আওয়ামী লীগকে দায়ী করেন। নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: সদর উপজেলার রাজঘর গ্রামে আজ সকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে ইসরাইল মিয়া (২০) নামের একজন মারা গেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শওকত হোসেন প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওবায়দুল মুক্তাদির চৌধুরী আজ বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের রাজঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে যান। এ সময় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ গুলি ছোড়ে। পরে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ ইসরাইলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শওকত হোসেন বলেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে ইসরাইল মিয়ার মৃত্যু হয়েছে। তাঁর পিঠে গুলির চিহ্ন আছে।

কক্সবাজার: জেলার পেকুয়ার রাজাখালী উলুদিয়া এলাকায় মো. আবদুল্লাহ নামের এক নৌকার সমর্থক ভোট দিতে গিয়ে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে মারা গেছেন। মাতবরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আজ সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে সাতজন আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা বলেন, আবদুল্লাহকে দ্রুত পেকুয়া ৩১ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসা কর্মকর্তা মজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালে আবদুল্লাহকে মৃত অবস্থাতেই আনা হয়। ধারালো অস্ত্রের আঘাত তাঁর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাতজনের মধ্যে চারজন ধানের শীষ এবং তিনজন নৌকা প্রতীকের সমর্থক।

রাঙামাটি: কাউখালী উপজেলার ঘাগড়ায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমর্থকদের সংঘর্ষে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বাসেরউদ্দিন (৩৬) নিহত হয়েছেন। আজ সকাল সাতটার দিকে ঘাগড়া ইউনিয়নের কাসখালী এলাকায় দুই দলের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়। হামলায় গুরুতর আহত বাসের উদ্দিনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এ হামলায় ১৫ জন আহত হন।

রাঙামাটির পুলিশ সুপার আলমগীর কবির প্রথম আলোকে বলেন, ঘাগড়ায় সকালে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা মারা গেছেন। ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের পাঠানো হয়েছে। ওই এলাকার পরিস্থিতি এখন শান্ত।

নরসিংদী: জেলার শিবপুরের কুন্দারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের এজেন্ট মিলন মিয়া (৫৫) নামের একজন নিহত হয়েছেন। নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শফিউর রহমান প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা বলেন, ওই আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জহিরুল হক ভূঁইয়া বেলা ১১টার দিকে কুন্দারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে যান। তিনি তাঁর কর্মীদের ব্যালটে নৌকা প্রতীকে সিল মারতে বলেন। এ সময় ওই আসনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম মোল্লা ওই কেন্দ্র যান। তখন দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষকে সরিয়ে দেয়। দুই পক্ষ চলে যাওয়ার পরপরই এজেন্ট নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।

বগুড়া: বগুড়ার কাহালুতে একটি ভোটকেন্দ্রের সামনে সংঘর্ষে আজিজুল নামের এক যুবলীগ নেতা নিহত হয়েছেন। তিনি পায়কর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সহসভাপতি। আজিজুলের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।

বেলা ১১টার দিকে কাহালুর বাগুইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের সামনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় যুবলীগ নেতা আজিজুলকে টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এই ঘটনায় গুরুতর আহত যুবলীগের আরেক নেতা নাজমুল হুদা জুয়েলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আজিজুলের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন কাহালু থানার ওসি শওকত কবীর।

গাজীপুর: গাজীপুরে লিয়াকত হোসেন নামের একজন নিহত হয়েছেন। তিনি কাজী আজিমুদ্দীন কলেজের ছাত্রলীগের সাবেক ভিপি ছিলেন। আজ দুপুরের দিকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের হারিনাল এলাকায় হারিনাল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের কাছে দুর্বৃত্তরা তাঁর ওপর হামলা চালিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। লিয়াকতের ছোট ভাই গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাসুদ রানা এরশাদ দাবি করেন, তাঁর ভাই ভোটের স্লিপ দিচ্ছিলেন। এ সময় বিএনপির নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়ে তাঁর ভাইকে কুপিয়ে জখম করে। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর ভাই মারা যান। গাজীপুর মহানগর পুলিশের সদর থানার ওসি সমীর চন্দ্র সূত্রধর প্রথম আলোকে বলেন, পূর্বশত্রুতার জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড হতে পারে। এ ব্যাপারে তদন্ত করা হচ্ছে।

সিলেট: সিলেট-৩ আসনে বালাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সায়েম আহমদ সোহেল (২৬) পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে বিএনপি ও ছাত্রদল দাবি করেছে। আজ বেলা আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বিএনপির অভিযোগ, সায়েমের বুকের ডান পাশে গুলি লাগে। পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষের সময় সায়েমের গায়ে গুলি লাগে।

মন্তব্য

  • image

    মহাকাশ

    ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    ইসির আরেকটি দলীয় ও পক্ষপাতপুস্ট ভোটের আয়োজন। মানুষের যেই আশা ছিল ইসির উপর অন্ততঃ এই নির্বাচন সুস্থ করার জন্য তা প্রকারান্তরে পারেনি ইসি তার দলীয় স্বভাবের কারনে...

    • image

      নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

      ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

      ইসির উপর দোষ দিয়ে কি লাভ, এই ইসি কে দিয়েছে ?

  • image

    Nazmul Hasan Opu

    ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    বাক্স বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে, কিছু খাবার দাবার নিয়ে আসবে তাই। এতে বিচলিত হবার কিছু নেই।

  • image

    ARIFUR RAHMAN

    ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    দেশ এখন ডিজিটাল তাই সময়ের আগে ভোট হয়ে যাচ্ছে

  • image

    আজিম ইমরান

    ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    বিচ্ছিন্ন ঘটনা।

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    মানুষ কতটা অতিষ্ঠ হয়ে গেছে সেটা বুঝতে পারছি।

  • image

    Imran Qatar

    ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    ১০ জন মৃত্যুতেও ইসি বলবে এগুলো নির্বাচনী উত্তেজনা, এগুলো থাকবেই।

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    টি‌ভি খু‌লে ব‌সেন ভাই । দেখ‌বেন সুস্থ অার সুস্থ, উৎসব অার উৎসব । কিছু‌মিছু বি‌চ্ছিন্ন ঘটনা এমন কিছু না ।

    • image

      নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

      ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

      Do we need these TV.

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    We feel shame to say we are democracy country. Shame of our EC who says election is successful.

    • image

      নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

      ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

      The country is asamed.

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    BNP Supporters

    • image

      নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

      ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

      The .... of AL

  • image

    শফিউল আলম

    ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    সব দুর্বৃত্তরা করছে!! কারা এই দুর্বৃত্ত.??

    • image

      নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

      ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

      CEC and his colaborators.

  • image

    Rony

    ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    বিএনপি যে কতটুকু সহিংস হতে পারে তা আবারও প্রমান করলো আজ...

    • image

      নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

      ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

      Mirzafar is loughing along with AL

  • image

    aryan rahman

    ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    Blind CEC look at this

  • image

    Saki

    ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    গনতন্ত্র কে আজ গলা টিপে মেরে ফেলা হলো

    • image

      নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

      ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

      Its the whole country.

  • image

    Zulfikar

    ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    ভোট পরবর্তী সময়ের জন্য অপেক্ষার পালা......

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    দুর্বৃত্ত শব্দটি হাস্যকর।

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    এই পর্য্যন্ত নির্বাচনী সহিংসতায় নিহত ১৩ জন, এরমধ্যে নৌকা সমর্থক নেতা কর্মীই ১০ জন। জামাত বিএনপি ক্ষমতায় এলে এই সংখ্যা 13 লক্ষ্য হবে। জামাত বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রুখতে আওয়ামীলীগ ছাড়া বিকল্প নেই এই মুহূর্তে।

  • image

    rebel Pazi

    ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    রাতেই তো কাম সারা হয়ে গেছে মানুষ মারার কোন দরকার ছিল না ।

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    আজ বুঝলাম, সত্যিই বিএনপি লাশের রাজনীতি করে তা না হলে কি করে তারা ১০ বছর ক্ষমতার বাইরে থেকেও এতগুলো মানুষ হত্যা করে। আর ক্ষমতায় থাকলে কি করতো অকল্পনীয়!!!

  • image

    বাপি দে (কলকাতা)

    ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

    ভোট ভালই হয়েছে দেখে বোঝা যাচ্ছে । কারন যদি তুলনা করি , তাহলে আমাদের রাজ্যের শ্রেফ পঞ্চায়েত ভোটেই ৮৫ জন খুন হয়েছে তাও ৮০ ভাগই বিরোধীদের । সেখানে একটা দেশের ভোটে মাত্র ১৩ জন খুন আর বেশিরভাগই ক্ষমতাশীল দলের । যদিও প্রতিটা খুনই খারাপ ও বেদনাদায়ক । কিছু বুথে রিগ হয়েছে এটা ঠিক । তবে ওভারল মানুষজন ভোট দিয়েছে সেটা বোঝা যাচ্ছে । রেসাল্ট দেখে বোঝা যাচ্ছে যে সাম্প্রদায়িক জামাতকে নিয়ে বিএনপির ভোটে লড়াটা যুব সমাজ ভালভাবে নেয়নি ।

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮

    ক্ষমতায় না থেকেই বিএনপির এতো প্রতিহিং! আর ক্ষমতায় থাকলে কি করতো কে জানে!!!

সব মন্তব্য