মজিবুরের কাছে আবার ধরাশায়ী জাফর উল্যাহ

প্রবীর কান্তি বালা, ফরিদপুর ০১ জানুয়ারী, ২০১৯

মজিবুর রহমান চৌধুরী ও কাজী জাফর উল্যাহফরিদপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান চৌধুরীর কাছে আবার ধরাশায়ী হলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ। নির্বাচনে কাজী জাফর উল্যাহ ৪৯ হাজার ৯৪৫ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। ২০১৪ সালে কাজী জাফর উল্যাহ ২৬ হাজার ৫২ ভোটের ব্যাবধানে মজিবুর রহমানের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। এ বছর সে ব্যবধান আরও বেড়েছে।

ফরিদপুর-৪ সংসদীয় আসনটি ভাঙ্গা ও চরভদ্রাসন উপজেলা এবং কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন ব্যতীত সদরপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত। পাঁচ বছর আগে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে কাজী জাফর উল্যাহকে হারিয়ে চমক সৃষ্টি করেছিলেন ‘বহিরাগত’ মজিবুর রহমান। সে সময় মজিবুর রহমান পাশের মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। অবশ্য ওই নির্বাচনে বিজয়ের পর তিনি ভাঙ্গার আজিমপুর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণপাড়া গ্রামে জমি কিনে বাড়ি বানান। ওই নির্বাচনে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মজিবুরকে ভোট দিয়েছিলেন নৌকার মাঝি পরিবর্তনের জন্য। মজিবুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিকটাত্মীয় (বঙ্গবন্ধুর ভাগনে ইলিয়াস চৌধুরীর ছেলে)। তিনি বিজয়ী হলে এ আসনটি আওয়ামী লীগের কবজায় থাকবে বলে আশা করেছিলেন এলাকাবাসী। কিন্তু গত পাঁচ বছরে আওয়ামী লীগে যোগ দেননি মজিবুর রহমান। তিনি তাঁর নিজস্ব স্বতন্ত্র সত্তা অক্ষুণ্ন রেখে চলেছেন।

ওই সংসদীয় আসনের অন্তত ১৪ জন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বিষয়টি এবারের নির্বাচনী প্রচারণায় পুঁজি করেছিলেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহ ও তাঁর সমর্থকেরা। তাঁদের দাবি ছিল, স্বতন্ত্র সাংসদ গত পাঁচ বছরেও নৌকার মাঝি হতে পারেননি। তিনি নৌকার মাঝি হবেন প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনগণকে ধোঁকা দিয়েছেন। এবার নির্বাচনে তাঁকে (মজিবুর) প্রত্যাখ্যান করবে এলাকার জনগণ। এর সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাদের আশা ছিল, ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। ওই নির্বাচনে বিএনপির ভোট পেয়েছিলেন মজিবুর। এবার বিএনপি প্রার্থী দিয়েছে এবং তারা যে ভোট পাবে, তা মজিবুরের ভোট থেকে বিয়োগ হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এবারের নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী খন্দকার ইকবাল হোসেন ১২ হাজার ৩৮০ ভোট পেলেও কাজী জাফর উল্যাহর পরাজয়ের ব্যবধান না কমে বরং বেড়ে গেছে।

জানতে চাইলে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার বালিয়াডাঙ্গি গ্রামের বাসিন্দা আবদুস সবুর কাজল বলেন, মজিবুরের আবার জিতে আসার কারণ হলো, তিনি তৃণমূলের মানুষের দোরগোড়ায় যেতে পেরেছিলেন। তৃণমূলের লোকজন দল দেখেনি, দেখেছে ব্যক্তি মজিবুরকে। পক্ষান্তরে কাজী জাফর উল্যাহ তৃণমূলের সঙ্গে মিশতে পারেন না বলে এলাকায় বদনাম রযেছে।

সদরপুর উপজেলার পূর্ব শ্যামপুর গ্রামের বাসিন্দা সাব্বির হাসান বলেন, এ এলাকার সাধারণ মানুষ সাংসদ কী জিনিস, তা বুঝত না। মজিবুর রহমান আসার পর সাংসদের কাছ থেকে মূল্যায়ন ও এলাকার উন্নয়ন পেয়েছে সাধারণ মানুষ।

এ ব্যাপারে কাজী জাফর উল্যাহ বা মজিবুর রহমানের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। কাজী জাফর উল্যাহর সমর্থক ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোবাহান মুন্সী বলেন, ‘নির্বাচনী কৌশলের কাছে আমরা হেরে গেছি। সারা দেশে ভোট হয়েছে যে ফর্মুলায় ফরিদপুর-৪ আসনে ভোট হয়েছে ভিন্ন ফর্মুলায়।’ তিনি হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘এত ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পরাজয় মেনে নেওয়া যায় না। এ ফলাফল বলে দেয় নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে।’

মজিবুর রহমানের সমর্থক ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাদাত হোসেন বলেন, গত পাঁচ বছরে স্বতন্ত্র সাংসদ এ এলাকার মাটি ও মানুষের সঙ্গে মিশে যেতে পেরেছেন। তারপরও তিনি এলাকার উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রেখেছেন। জনগণ এ বিষয়গুলোই মূল্যায়ন করেছে মাত্র।

মন্তব্য

  • image

    Md. Ruhul Amin

    ০১ জানুয়ারী, ২০১৯

    নিক্সন চৌধুরী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করলেও তিনি আওয়ামী পরিবারের লোক। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নের ছেলে। সেখানে আসলে ব্যক্তিত্বের লড়াই, মার্কার লড়াই হয়নি।

  • image

    Zunaid Ahmed

    ০১ জানুয়ারী, ২০১৯

    জাফরুল্লাহ সাহেবের জন্য এটা লজ্জার।আর যেন তাকে মনোনয়ন না দেওয়া হয়।অভিনন্দন নিক্সন চৌধুরি।

    • image

      নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

      ০১ জানুয়ারী, ২০১৯

      মনের কথা বলেছেন।

  • image

    Maksud Haque

    ০১ জানুয়ারী, ২০১৯

    ইউটিউবের কল্যানে আমার মত হাজার হাজার লোক মুজিবুর রহমান নিক্সনের ভক্ত !! তার কথা বলার স্টাইল গতানুগতিক রাজনীতিবিদদের মত না -এলাকার সমস্যা সুখ দু:খের কথা আগে বলেন !! তরুন প্রজন্ম ফলো করতে পারেন নিক্সনকে!!

  • image

    ফাহীম

    ০১ জানুয়ারী, ২০১৯

    এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন এবং মানুষের সাথে মিশে যাওয়ার নৈপুণ্যই তাকে আবার বিজয়ী হতে সাহায্য করেছে. এবং এর সাথে তিনি প্রমান করেছেন যে শাসন নয়, জনগণের পাশে থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরও বার বার ক্ষমতায় আশা যায়

  • image

    aktaruzzaman

    ০১ জানুয়ারী, ২০১৯

    Welcome Nixon chowdhury.

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ০১ জানুয়ারী, ২০১৯

    জাফরুল্লাহ সাহেবের জন্য এটা লজ্জার

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ০১ জানুয়ারী, ২০১৯

    Feeling good, Faridpur-4 is my own constituency.

  • image

    msIqbal

    ০১ জানুয়ারী, ২০১৯

    বড় ধাঁধায় পরে গেলাম তো !!! আওয়ামী লীগ যদি সারা দেশে প্ল্যান করেই জয়ী হয়ে থাকে, তাহলে আওয়ামী লীগের সেই প্ল্যান থেকে কাজী জাফর উল্যাহ কি করে বাদ পরতে পারেন????

    • image

      Imran

      ০১ জানুয়ারী, ২০১৯

      নিক্সন চৌধুরী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করলেও তিনি আওয়ামী পরিবারের লোক। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নের ছেলে।

    • image

      ফাহীম

      ০১ জানুয়ারী, ২০১৯

      এর কারণ জনাব নিক্সন খুব জনপ্রিয় এই এলাকায়, এখানে প্ল্যান করে কিছু করা যাবেনা। মানুষ রুখে দাড়াত

    • image

      Asif ul Huq

      ০২ জানুয়ারী, ২০১৯

      Do n't you read আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোবাহান মুন্সী বলেন, ‘নির্বাচনী কৌশলের কাছে আমরা হেরে গেছি। সারা দেশে ভোট হয়েছে যে ফর্মুলায় ফরিদপুর-৪ আসনে ভোট হয়েছে ভিন্ন ফর্মুলায়।’ They were sure that their awami candidate will win even in fair election.

  • image

    Md Washim Patwary

    ০১ জানুয়ারী, ২০১৯

    উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোবাহান মুন্সী বলেন, ‘নির্বাচনী কৌশলের কাছে আমরা হেরে গেছি। সারা দেশে ভোট হয়েছে যে ফর্মুলায় ফরিদপুর-৪ আসনে ভোট হয়েছে ভিন্ন ফর্মুলায়।’ Welcome Nixon Chowdhury. & Congratulation ...

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ০১ জানুয়ারী, ২০১৯

    কাজী জাফর উল্যাহর সমর্থক ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোবাহান মুন্সী বলেন, ‘নির্বাচনী কৌশলের কাছে আমরা হেরে গেছি। সারা দেশে ভোট হয়েছে যে ফর্মুলায় ফরিদপুর-৪ আসনে ভোট হয়েছে ভিন্ন ফর্মুলায়।’ তিনি হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘এত ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পরাজয় মেনে নেওয়া যায় না। এ ফলাফল বলে দেয় নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে।’

  • image

    Mohiuddin Ahmed

    ০১ জানুয়ারী, ২০১৯

    This may be an example of Democracy in front of the Nation.

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ০১ জানুয়ারী, ২০১৯

    Fair election area.

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ০১ জানুয়ারী, ২০১৯

    Joy Bangla Joy Bangabandhu.

  • image

    Monirul Hoque

    ০১ জানুয়ারী, ২০১৯

    তারুণ্য, মেধা এবং উদারতার কাছে আত্ম অহংকারের পরাজয়। ভীষণ পরিশ্রমী, উদ্যমী এবং পরিছন্ন রাজনীতির প্রতীক নিক্সন চৌধুরী।

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ০১ জানুয়ারী, ২০১৯

    এমপি নিক্সনের জনপ্রিয়তাই তাকে বারেবারে নির্বাচিত করছে।

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ০১ জানুয়ারী, ২০১৯

    ভাংগা উপজেলায় আজমপুর নামে কোন ইউনিয়ন নেই। @প্রবীর কান্তি বালা -দয়াকরে আরো পড়াশুনা করে রিপোর্ট লিখবেন। ইউনিয়নের নাম ভুল লেখা আপনার সাংবাদিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

  • image

    Golam Ali

    ০১ জানুয়ারী, ২০১৯

    জিতলে নিরপেক্ষ, হারলে কারচুপি এই মানসিকতা পরিত্যাগ করা উচিত।

  • image

    Rajdhani

    ০২ জানুয়ারী, ২০১৯

    কাজী জাফরউল্লাহ গত দুর্গাপূজায় কাঁসা বাজিয়ে নেচেছিলেন - এটা ধর্মপ্রাণ অনেক আওয়ামী সমর্থককে ক্ষুব্ধ করেছে - নিক্সন সেই সুযোগটাকেই কাজে লাগিয়েছে।

সব মন্তব্য