ভোটের ব্যবধানে বড় ফারাক

প্রণব বল, চট্টগ্রাম ০৩ জানুয়ারী, ২০১৯

ভোটের ব্যবধানে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে এবারের নির্বাচন। চট্টগ্রামের ১৬ আসনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট যেখানে ৮৫ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছে, সেখানে বিএনপি জোট পেয়েছে মাত্র ১০ শতাংশ। অথচ এর আগের নির্বাচনগুলোতে এই দুই দলের ভোট ছিল প্রায় সমান।

২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জোট চট্টগ্রামের ১৬ আসনের মধ্যে চারটিতে জিতেছিল। সেবার চট্টগ্রামে তারা ৪৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। আওয়ামী লীগ জোট জিতেছিল ১১টি আসনে। তাদের ভোট ছিল ৪৬ দশমিক ১৫ শতাংশ।

বড় ব্যবধানে জয় ছিল জামায়াতের আ ন ম শামসুল ইসলামের—প্রায় ৬০ হাজার ভোট। অন্যগুলোতে ব্যবধান ছিল প্রায় ৮ থেকে ৩৭ হাজার ভোটের।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ জোটের মধ্যে সর্বোচ্চ ২ লাখ ৬২ হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন মিরসরাইয়ে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। ১২টি আসনে দুই লাখের বেশি ব্যবধানে জিতেছে আওয়ামী লীগ।

১৬ আসনে আওয়ামী জোট মোট ৩৭ লাখ ৭৬ হাজার ২৬৯ ভোট পেয়েছে। ১৬ আসনেই তারা জয়ী হয়েছে। এটি মোট প্রদত্ত ভোটের ৮৫ দশমিক ১৮ শতাংশ। ১০টি আসনে ৮০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। তিনটিতে প্রায় ৮৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।

অন্যদিকে ১৬ আসনে বিএনপি জোটের প্রার্থীরা মোট ৪ লাখ ৬০ হাজার ৯৪৯ ভোট পান। এটি মোট প্রদত্ত ভোটের ১০ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এই জোটের ১০ জন তাঁদের জামানত হারিয়েছেন। চট্টগ্রাম-১৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী তৃতীয় হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন প্রদত্ত ভোটের ১ দশমিক ২২ শতাংশ। সন্দ্বীপে বিএনপি প্রার্থী পেয়েছেন মাত্র ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ ভোট।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এটা তো প্রহসনের নির্বাচন। সাধারণ ভোটার থেকে শুরু করে এজেন্ট—কেউ কেন্দ্রে যেতে পারেননি। সরকারি দলের লোকজন আগের দিন রাত থেকে ভোট নিয়েছে। এ কারণে এই ব্যবধান।’

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রাম-১১ আসনে এম এ লতিফের কাছে হেরেছেন। এখানে তিনি ১৫ শতাংশ ভোট পান। তাঁর জামানত রক্ষা হলেও বাজেয়াপ্ত হয়েছে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের জামানত। চট্টগ্রাম থেকে তিনি একাধিকবার নির্বাচিত হয়েছেন।

২০০১ সালে অষ্টম সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামে আসন ছিল ১৫টি। সেবার বিএনপি–জামায়াত জোট ১৩টি আসনে জয়লাভ করে। আওয়ামী লীগ দুটি আসনে জেতে। মোট প্রদত্ত ভোটের ৫৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ পেয়েছিল বিএনপি জোট। বিপরীতে আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ৪১ দশমিক ৮৪ শতাংশ।

ভোটের ব্যবধানে এত ফারাকের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী (নওফেল) প্রথম আলোকে বলেন, ‘এবার ভোটাররা ধারাবাহিকতা চেয়েছেন। পরিবর্তন চাননি। আমাদের নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা যেভাবে উৎসাহ নিয়ে কেন্দ্রে ভোট দিতে গেছেন, সেভাবে বিএনপির নেতা–কর্মী–সমর্থকেরা যায়নি। এর মূল কারণ নেতৃত্ব–সংকট। বিএনপি জিতলে নেতৃত্বে কে থাকবেন, তা নিয়ে বিভ্রান্তিতে ছিলেন সমর্থকেরা।

মন্তব্য

  • image

    Mr.RupoM.

    ০৩ জানুয়ারী, ২০১৯

    আওয়ামীলীগের সাথে বিএনপি জামাত জোটের যেমন ফারাক একটি সুষ্ঠু সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ভোটের ফলাফলেও তেমন ফারাক। ২০০৮ সালের নির্বাচনেও বিএনপি জামাত জোট আওয়ামীলীগের সাথে এভাবেই বড় ব্যবধানে হেরেছিল। তাদের আগুন সন্ত্রাসের পর ভোট আরো কমেছে ফারাক আরো বেড়েছে। জনগন প্রতিশোধ নিয়েছে জনবিরোধী ও অপরাজনীতির।

    • image

      Shahadat Hossain

      ০৩ জানুয়ারী, ২০১৯

      @মি. রূপম, তোমার নির্বাচনী এলাকা কোনটা ? ইলেকশন এ কি হয়েছে, রাতে হয়েছে না দিনে হয়েছে সবই যেন শুধু স্বীকার করোনা!! তবে দুঃখের বিষয় তোমরা ৩৬ জন রাজাকার ও যুদ্ধাপরাধীকেও এমপি বানিয়েছো, তোমাদের পরিণতি দেখার অপেক্ষায় রইলাম

    • image

      Mr.RupoM.

      ০৩ জানুয়ারী, ২০১৯

      আমাদের এলাকায় ধানের শীষে এলাকা ভিত্তিক সিল মেরেছে বিএনপি জামাত।

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ০৩ জানুয়ারী, ২০১৯

    চুরি করে জেতা যায় কিন্তুু সাধারণ ভোটারদের মন পাওয়া যায় না এই নিবার্চনে মানুষের মনে আঘাত করা হয়েছে আমি ও আঘাত পেয়েছি আমার ভোট না দিতে পেরে ধণ্যবাদ নির্বাচন কমিশন যুবক যুবতীদের ভোট নষ্ট করায়।

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ০৩ জানুয়ারী, ২০১৯

    এসব লিখে আপনারা কি বুঝাতে চান? প্রকৃত পক্ষে যে কোনো ভোট হয়নি সেটা সবাই জানে। এই ধরনের ভোটের মাধ্যমে এই সরকার স্বৈরতন্ত্রে পাকাপাকি ভাবে প্রবেশ করলো। হায়রে বঙ্গবন্ধু'র আওয়ামীলীগ! তিনি তো কোনো দিন জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়ার পক্ষে ছিলেন না। বর্তমানে দল এবং প্রশাসনের মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকলো না।

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ০৩ জানুয়ারী, ২০১৯

    এমন ভোট চুরি হবে তাহলে ভোট কেন্দ্রে যাইতাম না

  • image

    Milsha

    ০৩ জানুয়ারী, ২০১৯

    ক্লান্তিহীন মিঃ রুপমের বক্তব্যগুলি আমাদেরও ক্লান্তিহীন বিনোদন দিচ্ছে।

  • image

    sultan ahmed bulu

    ০৩ জানুয়ারী, ২০১৯

    ভোটে হার জিত আছে, কিন্তু সমস্থ রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে জোর করে কেউ যদি অন্যের ভোট নিজে দিয়ে বিজয় হয়, সেটা কে হার-জিত বলা কি ঠিক হবে?

  • image

    আন্দালিব

    ০৩ জানুয়ারী, ২০১৯

    আওয়ামীলীগ ও এণ্টি আওয়ামীলীগের মধ্যে গুনগতমানে ও যেকোন ইতিবাচক সূচকে যে ফারাক ভোটের ব্যবধানেও একইরকম ফারাক হওয়াটাই স্বাভাবিক।

  • image

    Mohammad Alamgir

    ০৩ জানুয়ারী, ২০১৯

    bnp stragically dishonored. if they concentrated north bengal/ kishoreganj, Sylhet, etc, they had done well.

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ০৩ জানুয়ারী, ২০১৯

    নবম সংসদ পর্যন্ত জনগণ ভোট দিয়েছিল। তাই ভোট সংখ্যাও ছিল প্রায় সমান সমান। এবার ভোট দিয়েছে গায়েবীলীগ। তাই এতো ব্যবধান।

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ০৩ জানুয়ারী, ২০১৯

    আমার কেন্দ্রে মোট ভোটের সংখ্যা ৪,৭০০ সেখানে ভোট কাস্ট করা হয়েছে ৫৮৮৭ টি। বাড়তি ভোট কোথায় থেকে নাযিল হলো ?

  • image

    আন্দালিব

    ০৩ জানুয়ারী, ২০১৯

    দেশী বিদেশী কোন মিডিয়া জোরালো কোন তদন্ত করছে না, এতো বড় কারচুপির এই নির্বাচন নিয়ে। সমালোচনা করলেও আলতোভাবে করছে

    • image

      নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

      ০৩ জানুয়ারী, ২০১৯

      অন্যর আইডি নকল করে যারা কমেণ্ট করে তারাই প্রকৃত কারচুপিবাজ।

  • image

    Nayeem Ahmed

    ০৩ জানুয়ারী, ২০১৯

    চট্টগ্রাম -১ আসনে পরাজিত প্রার্থী নূরুল আমিন সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ২০১৬ সালে, এই আওয়ামী লীগ আমলে, ধানের শীষ প্রতীকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলো অখচ এই এমপি নির্বাচনে ভোট পেয়েছে মাত্র ১.২৭% (৩,৯৯১) । এক্ই রকম কেস: কুষ্টিয়া-৩ আসনের পরাজিত প্রার্থী জাকির হোসেন ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ভোট পেয়েছেন ৩.৮৬% (১৪,৩৭৯)। নির্বাচনের ডাটা গবেষনা থেকে অনেক সত্য বের হয়ে আসবে ।

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ০৩ জানুয়ারী, ২০১৯

    ২০১৮ সা্লের নির্বাচনের ফলাফল বলে দিচ্ছে বিভিন্ন আসনে কি পরিমান ভোট ডাকাতি হয়েছে । ভোট প্রদানের উচ্চহার এবং বিজয়ী প্রার্থী’র সাথে নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী’র ভোটের ব্যবধান এর স্পষ্ট প্রমাণ । বোঝা যাচ্ছে তাঁহাদের কোন হুশই ছিলো না । উদহারণ সরূপ: কুষ্টিয়া-৩: মাহবুব উল আলম হানিফ বেসরকারিভাবে জয়ী (নৌকা ২,৯৬,৫৯২), নিকটতম: জাকির হোসেন (ধানের শীষ ১৪,৩৭৯ ভোট) কুষ্টিয়া -৩ এর মোট ভোটার ৩,৭২,৮০৫, বিজয় প্রার্থী পেয়েছেন ৭৯.৫৬% ভোট, নিকটতম পেয়েছেন ৩.৮৬% ভোট, ভোট পড়েছে আনুমানিক ৮৩.৪২%+ । চাঁদপুর-১: মহিউদ্দীন খান আলমগীর বেসরকারিভাবে জয়ী (নৌকা ১,৯৭,৬৬৬), নিকটতম: মোশাররফ হোসেন (ধানের শীষ ৭,৯০৪) চাঁদপুর-১ এর মোট ভোটার ২,৬৫,৪৫০, বিজয় প্রার্থী পেয়েছেন ৭৪.৪৬% ভোট, নিকটতম পেয়েছেন ২.৯৮% ভোট, ভোট পড়েছে আনুমানিক ৭৭.৪৪%+ । চট্টগ্রাম-৬: এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী বেসরকারিভাবে জয়ী (নৌকা ২,৩১,৪৪২), নিকটতম: জসিমউদ্দীন সিকদার (ধানের শীষ ২৩০৭) চট্টগ্রাম-৬ এর মোট ভোটার ২,৭০,৪৯২, বিজয় প্রার্থী পেয়েছেন ৮৫.৫৬% ভোট, নিকটতম পেয়েছেন ০.৮৫% ভোট, ভোট পড়েছে আনুমানিক ৮৭.২৬%+ । নির্বাচনের দিনে এই আসনগুলো’র ফলাফল প্রচারিত হয় সন্ধ্যা ৭টা’র মধ্যে, অথচ ইভিএম আসনগুলো’র ফলাফল ৯টা নাগাদ প্রকাশিত হয়নি । চট্টগ্রাম-১: ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন বেসরকারিভাবে জয়ী (নৌকা ২,৬৬,৬৬৬), নিকটতম: নূরুল আমিন (ধানের শীষ ৩,৯৯১) চট্টগ্রাম- ১ এর মোট ভোটার ৩,১৪,৯৮৫, বিজয় প্রার্থী পেয়েছেন ৮৪.৬৬% ভোট, নিকটতম পেয়েছেন ১.২৭% ভোট, ভোট পড়েছে আনুমানিক ৮৫.৯%+ ।

  • image

    আন্দালিব

    ০৩ জানুয়ারী, ২০১৯

    বিএনপির সমর্থকরাও জানে বিএনপির এই মাজাভাঙ্গা অপদার্থ নেতারা আবারো ক্ষমতায় এলে দেশের কি হাল হবে তাই তারাও অধিকাংশ আওয়ামীলীগকেই ভোট দিয়েছে, এতে তাদের দুটি লাভ--এক, দেশের উন্নতির সুফল ভোগ করতে পারবে দুই, সরকারের দোষ ত্রুটি নিয়ে সরকারের উন্মুক্ত বাকস্বাধীনতা ভোগ করে অনলাইনে টকশোতে তাদের মজ্জাগত গালিবাজি অভ্যাসটা চালিয়ে যেতে পারবে উপরন্তু অতিরিক্ত ভোট পাওয়া নিয়ে সরকারকে সন্দেহের মধ্যে ফেলে প্রশ্নবিদ্ধও করা যাবে।

সব মন্তব্য