• তানোরের কলমা
• ধানের শীষে ভোট বেশি পড়েছে
• তাই বাস ঢুকছে না
• ডিশ লাইন কেটে দেওয়া হয়েছে
গ্রামটির ভেতরে দিয়ে যাত্রীবাহী বাস চলত। ৩০ ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচনের পর সেই গ্রামে আর বাস ঢুকছে না। বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে টেলিভিশনের স্যাটেলাইট সংযোগ। অটোরিকশার চালকদের গ্রামের বাইরে যেতে বারণ করে দেওয়া হয়েছে। একইভাবে বাইরের গাড়িগুলোও গ্রামের ভেতর দিয়ে যাতায়াত করছে না।
রাজশাহীর তানোরের এই গ্রামটির নাম কলমা। এটি রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের একটি গ্রাম। রাজশাহী শহর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে এই গ্রামের ভোটাররা কলমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন। এই কেন্দ্রে বিএনপি প্রার্থী আমিনুল হক পেয়েছেন ১ হাজার ২৪৯ ভোট। আর আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী পেয়েছেন ৬৫৩ ভোট। নাম প্রকাশ না করার শর্তে গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, একটা ‘দোষে’ তাঁদের গ্রাম এখন বাইরের জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন। দোষটা হলো, নৌকার চেয়ে ধানের শীষে ভোট বেশি পড়েছে।
গতকাল শুক্রবার সকালে কলমা গ্রামে গিয়ে বিএনপির কোনো নেতাকে পাওয়া না গেলেও সমর্থকেরা ছিলেন। প্রকাশ্যে তাঁরা কিছু বলতে চাননি। তাঁদের ভাষায়, বাস বন্ধ, ডিশ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পাশাপাশি গ্রামের গভীর নলকূপগুলো আওয়ামী লীগের লোকজন দখলে নিয়েছেন। এবার হয়তো তাঁদের সেচের পানিও দেওয়া হবে না। গ্রাম থেকে বের হতে হলে পশ্চিমে বিল্লি গ্রাম এবং পূর্বে দরগাডাঙ্গা গ্রামের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। কিন্তু কোনো দিক দিয়েই গ্রামের লোকজন আর বের হতে পারছে না।
তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘কলমা গ্রামের বিষয়টি আমিও শুনেছি। কিন্তু আমার কিছু করার নেই।’
এক গ্রামবাসী বলেন, এখন আর দলমত দেখা হচ্ছে না। যাকে পাচ্ছে তাকেই মারছে, হুমকি দিচ্ছে। গত বুধবার গ্রামের আওয়ামী লীগ সমর্থক দুই শিক্ষক একটি মোটরসাইকেলে করে কলেজে যাচ্ছিলেন। পথে তাঁদের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে দুজনকেই মারধর করা হয়েছে।
গ্রামের এক অটোরিকশাচালক বলেন, আওয়ামী লীগের লোকজন তাঁকে দরগাডাঙ্গা বাজার থেকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এখন তিনি গাড়ি নিয়ে গ্রামের বাইরে যেতে পারছেন না।
ওই চালক যখন এ কথা বলছিলেন, তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন কলমা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম। তাঁর অভিযোগ, ভোটের আগের দিন কলমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও তানোর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি লুৎফর হায়দার লোকজন নিয়ে কলমা বাজারে বসে ছিলেন। বিএনপির লোকজন তাঁদের ওপর হামলা চালান। এতে আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতা–কর্মী আহত হন। গ্রামের বিএনপি কর্মীরা এ কারণে আওয়ামী লীগের রোষানলে পড়েছেন। তবে কয়েক দিন পর সব ঠিক হয়ে যাবে। আর দুই শিক্ষককে মারার ঘটনাটি ভুল–বোঝাবুঝি।
কলমা বাজারে গিয়ে কয়েকটি মাত্র দোকান খোলা পাওয়া যায়। একটি রেস্তোরাঁও খোলা ছিল। মালিক আবদুল মোত্তালেব বলেন, আগে যত লোক বাজারে আসত, নির্বাচনের পরে তিন ভাগের এক ভাগ লোকও আসছে না। বেচাকেনা একেবারে মন্দা।
পাশের দরগাডাঙ্গা বাজারে কথা হয় একজন ভটভটিচালকের সঙ্গে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের লোকজন তাঁদের কলমা গ্রামের ভেতর দিয়ে যেতে নিষেধ করেছেন।
রাজশাহী থেকে তানোরের বিল্লি সড়কে চলাচলকারী বিসমিল্লাহ পরিবহনের একটি বাসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ভোটের পর থেকে কলমা গ্রামের ভেতর দিয়ে বাস চলছে না। কেন চলছে না, জানতে চাইলে তিনি প্রথমে কোনো উত্তর দিতে চাননি। একপর্যায়ে বলেন, ‘ওখানে মারামারি হয়েছে, এ জন্য বাস আর ওদিক দিয়ে যাচ্ছে না।’
এ ব্যাপারে কথা বলার চেষ্টা করা হয় তানোর থানার ওসি রেজাউল ইসলাম ও কলমা ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দারের সঙ্গে। তাঁরা ফোন ধরেননি।
তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চৌধুরী মো. গোলাম রাব্বী প্রথম আলোকে বলেন, তিনি বিষয়টি জানেন না। কেউ তাঁকে এ বিষয়ে কিছু বলেননি। তিনি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন।
মন্তব্য
মন্তব্য করুন প্রথমআলো.কম এ
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
বাহ দারুন তো!!!! ধানের শীষে ভোট দিলে আর কি কি হবে?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
Hirok Rajar Desh
mohammed ullah
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
গত বুধবার গ্রামের আওয়ামী লীগ সমর্থক দুই শিক্ষক একটি মোটরসাইকেলে করে কলেজে যাচ্ছিলেন। পথে তাঁদের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে দুজনকেই মারধর করা হয়েছে। গ্রামের এক অটোরিকশাচালক বলেন, আওয়ামী লীগের লোকজন তাঁকে দরগাডাঙ্গা বাজার থেকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এখন তিনি গাড়ি নিয়ে গ্রামের বাইরে যেতে পারছেন না। As per Jamat /BNP's opinion all vote was casted at night !
reja khan
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
ভেতরের কাহিনীটা পড়ে বুঝলাম, এখানে সন্ত্রাসীদের বসতি আছে। নইলে, দুই দুইবার এরা আক্রমণ চালিয়েছিলো কেনো??
মোঃ আজাদ হোসাইন
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
প্রতিবশীর হক সম্পর্কে সচেতন হউন। সামান্য ক্ষমতার দাপট দেখাতে গিয়ে নিজের ক্ষতিসাধন করবেন না।
Soyeb Islam
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
"মগের মুল্লুক" বলে প্রচলিত কথাটা বদলানোর সময় হয়েছে।
ibne mizan
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
Where do people go? BAKSHAL is here.
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
ঠিকই তো আছে। সমস্যা কি। ধানের শীষে ভোট দেবার অাগে খেয়াল ছিল না যে বৃষ্টি যেদিক থেকে আসে ছাতা সেই দিকেই ধরতে হয়। জানাই আছে আওয়ামীলীগ আসবে। কেন আগ বাড়িয়ে ধানের শীষে ভোট দিল তারা। আর স্থানীয় আওয়ামীলীগের এবং প্রশাসনের গাফিলতি ছিল অনেক। তারা বিরোধী লোকদের কেন ভোট দিতে দিল?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
ধন্যবাদ প্রথম আলোকে , ভোটের পরের প্রতিহিংসামুলক অমানবিক চিত্রের মধ্যে একটি চিত্র প্রকাশ করার জন্য যে সমস্যাটা এখন দেশের অনেক জায়গায় সৃষ্টি হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
koi sob propaganda warfare cadre ra kothai? comments korsen na keno??
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
স্বৈরাচার নিপাত যাক, স্বাধীনতা মুক্তি পাক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
BAKSAL loading... one party rule all over again
Zubayer Rahman
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
বাকশাল থাকলে আপনি এখানে কথা বলতে পারতেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
Like
Tanvir
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
পাঞ্জাবীরা যখন বাঙালিদের উপর নির্যাতনের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছিল তখন কিন্তু বাঙালিরা চুপ করে নির্যাতন সহ্য করে যায় নি। তারা প্রতিবাদ করে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তখন কিন্তু অনেক দেশ বাঙালিদের সন্ত্রাসী বলে আখ্যা দেয়, বাস্তবে বাঙালি নিজের অধিকারের জন্য লড়েছিল।
S. M. Abdul Haque
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
2001 back here shame of politics....
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
মনে হচ্ছে আদিম যুগের স্টাইলে নির্যাতন শুরু করেছে আ'লীগ!
Azizul Hoque
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
কেউ এই গ্রাম যে থানার অধীনে সেই থানার ওসি, ইউএনও এবং ডিসি-র ফোন নাম্বার দিতে পারেন দয়া করে ?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
ভোট নাকি সব রাতেই হয়ে গেছে, তাহলে এই গ্রামের সবাই ধানের শীষে ভোট দিলো কখন??
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
দয়াকরে জনগণকে মাফ করে দেন
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
AL dirty politics, as-usual
jhalak khan
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
এমন ঘটনা হবার কথা নয় । বিশ্বাস হচ্ছেনা । কর্তৃপক্ষ টের পেলে সমাধান হয়ে যাবে ।
Zubayer Rahman
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
বিশ্বাস না হলে নিজে গিয়ে দেখে আসুন না একবার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
সারা দেশে নাকি সিল মেরে নিয়ে গেছে, বি এন পি বেশি পেলো কি ভাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
একজন বাংলাদেশী হিসেবে আমাদের লজ্জিত হওয়া উচিৎ।
Sohel S.parvez
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
এ এক অদ্ভুত সমাজ আমাদের এখন!!আওয়ামী লীগ,বিএনপি কেউ কারো জানাজা ও পরে না।রাজনীতি বিদরাও উদ্যোগ নিয়ে সহমর্মিতা গড়ে তোলার চেষ্টা করেন না।সব কিছু বিভক্ত দুই ভাগে!আহা কি কষ্ট!কি লজ্জা!
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
Thanks to "PROTHOM ALO" . It High lighted to the people . It need to knows in the nation.
MD.ROJJOB
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
এগুলো ঠিক না বরং আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করে সরকারের প্রতি আরো ভালো ভাবে তুলে ধরা যাইত
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
Very sad for our`s. Is it democracy? Where our constitution?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
আমাদের ভোট দিতে না দিয়ে তো তাহলে ভালোই করেছে...
Zubayer Rahman
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
২০০১ সালের নির্বাচন এর পরে বিএনপি যে সকল অন্যায় করেছিলো, এবার আওয়ামী লীগ সেগুলোই করছে। বিএনপি তো "বিলুপ্ত" হওয়ার পথে, আওয়ামী লীগও কি সেই পথে হাঁটবে?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
০৫ জানুয়ারী, ২০১৯
“I am the democracy, get me out of here.”
শেখ সায়ফুল্লাহ
০৬ জানুয়ারী, ২০১৯
তারা বিরোধী দলকে কোন পাত্তা না দিয়ে, জনগণের আকাঙ্খাকে পায়ে দলে, ভোটের আগে এবং ভোটের দিন যা খুশী তাই করে যেন তেন একটা ভোটের নাটক মঞ্চস্থ করে বিজয়ী হয়ে ধরা কে সরা জ্ঞান করছে! কিন্তু ভুলে গিয়েছে পাপীর পাপের পেয়ালা পূর্ণ হলে তার পতন ত্বরান্বিত হয়! জনগণ ঠিক ততোক্ষণ পর্যন্ত ভদ্র যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের ধৈর্য্যের বাধ ভেঙ্গে না যায়, যখন ধৈয্যের বাধ ভেঙ্গে যায় তখন কি হয় তা এরশাদ খুব ভাল করেই জানে। তাকে পাশে বসিয়ে রেখে চোখ বন্ধ কাকের মত আচরণ করে কোন লাভ নেই! - - - ধরা যাবে না, ছোয়া যাবে না, বলা যাবে না কথা, রক্ত দিয়ে পেলাম আজব স্বাধীনতা
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
০৬ জানুয়ারী, ২০১৯
দিনে দিনে বহু বাড়িয়াছে দেনা শুধিতে হইবে ঋণ