২ লাখ ২৩ হাজার ৬৭২ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন ইমরান আহমদ। আর ১ লাখ ৭৬ হাজার ৫৮৭ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী।
সিলেটে টানা তৃতীয়বারের মতো সংসদ নির্বাচনে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের দুই নেতা। হ্যাটট্রিক করা এই দুই সাংসদ হলেন সিলেট-৪ আসনের ইমরান আহমদ ও সিলেট-৩ আসনের মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। দুজনই জিতেছেন বিপুল ভোটের ব্যবধানে।
গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ নিয়ে সিলেট-৪ আসন গঠিত। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে পাওয়া ফলাফলে দেখা গেছে, এই আসনে ২ লাখ ২৩ হাজার ৬৭২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ইমরান আহমদ। তিনি সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পদে আছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী দিলদার হোসেন পেয়েছেন ৯৩ হাজার ৪৪৮ ভোট। দুজনের মধ্যে ভোটের ব্যবধান ১ লাখ ৩০ হাজার ২২৪টি।
এর আগে ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইমরান ৬৩ হাজার ৩২৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারুক আহমেদ পান ২৪ হাজার ২৭৮ ভোট। আর ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইমরান পেয়েছিলেন ১ লাখ ৪৪ হাজার ১৯৮ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির দিলদার হোসেন ধানের শীষ প্রতীকে পান ৯৮ হাজার ৫৪৫ ভোট। ইমরান আহমদ এর আগেও এ আসনে তিনবার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। সব মিলিয়ে তিনি মোট ছয়বার সাংসদ হলেন। এ ছাড়া সপ্তম ও অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন।
ইমরান আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘টানা তৃতীয়বারের মতো জয় পেয়েছি। এ আসন থেকে সর্বমোট ছয়বার নির্বাচিত হয়েছি। এলাকার মানুষ ভালোবেসে বারবার আমাকে নির্বাচিত করেছেন। আমি তাঁদের ভালোবাসার প্রতিদান দিতে গিয়ে সাধ্যমতো উন্নয়ন করেছি; সুখে-দুঃখে তাঁদের পাশে থেকেছি। এবারও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন থাকবে।’ দীর্ঘদিন রাজনীতিতে যুক্ত থাকার পর এখন মন্ত্রী হতে চান কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রবীণ এই রাজনীতিক বলেন, ‘মন্ত্রী করা না-করা পুরোপুরি নেত্রী শেখ হাসিনার এখতিয়ার। এ প্রসঙ্গে আমার নিজস্ব কোনো বক্তব্য নেই। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন করছি, করে যাব। এটাই হলো আমার মূল কথা।’
সিলেট-৩ আসন গঠিত দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ নিয়ে। এ আসনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী এবার হ্যাটট্রিক জয় পেয়েছেন। তিনিও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পদে আছেন। এবার নৌকা প্রতীক নিয়ে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৫৮৭ ভোট পেয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির শফি আহমদ চৌধুরী পেয়েছেন ৮৩ হাজার ২৮৮ ভোট। দুজনের মধ্যে ভোটের ব্যবধান ৯৩ হাজার ২৯৯।
এর আগে ২০১৪ সালের নির্বাচনে মাহমুদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ৯৭ হাজার ৫৯৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। ওই নির্বাচনে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির শফি আহমদ চৌধুরী ৫৪ হাজার ৯৫৫ ভোট পেয়েছিলেন। এ ছাড়া ১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন।
টানা তৃতীয়বারের মতো জয় পাওয়া মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি মানুষের কাছে চিরঋণী ও চিরকৃতজ্ঞ। কারণ তাঁরা তিন বার আমার মনোনয়ন আনতেও সাহায্য করেছেন; নির্বাচিত করতেও সাহায্য করেছেন। আমি তাঁদের প্রত্যাশা বিগত দুটি মেয়াদে মোটামুটিভাবে সম্পন্ন করেছি। আর যেসব কাজ বাকি আছে, সেসব কাজ এই পাঁচ বছরে শেষ করে ফেলব। জনগণের প্রত্যাশা পূরণ এবং সন্তুষ্টির জন্যই আমি এলাকাবাসীর পরামর্শে সব সময় দায়িত্ব পালন করে যাব।’
মন্তব্য
মন্তব্য করুন প্রথমআলো.কম এ
মন্তব্য নেই