জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেতে যাওয়া ফরহাদ হোসেন মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন মেহেরপুর-১ আসনের (সদর ও মুজিবনগর) নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন। গতকাল রোববার বিকেলে নতুন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের নাম ঘোষণা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। এ সময় ফরহাদ হোসেনের নামও ঘোষণা করা হয়।
বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার গঠন হয়েছিল মেহেরপুরে মুজিবনগরের আম্রকাননে। অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর সহচর সৈয়দ তাজউদ্দীন আহমদ। পরবর্তী সময়ে আম্রকানন বৈদ্যনাথতলার নামকরণ হয় মুজিবনগর নামে। কিন্তু স্বাধীনতার ৪৭ বছরেও ঐতিহাসিক এই জেলা থেকে কেউ মন্ত্রিত্ব পাননি।
এবারে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মেহেরপুর-১ আসনে নৌকার প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হওয়ার পর ফরহাদ হোসেনকে মন্ত্রী বানানোর দাবি উঠতে থাকে মেহেরপুরে। সংসদ সদস্যদের শপথপাঠের পরপর এই দাবি জোরালো হতে থাকে। নির্বাচনের পরে ‘ফরহাদ হোসনেকে মন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই’ লিখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে দাবি জানান অনেকে। জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের দাবি ছিল, স্বাধীনতার ৪৭ বছর পার হলেও কোনো মন্ত্রী পায়নি মেহেরপুর। এবার অন্তত একজন সাংসদকে হলেও মন্ত্রী বানানো হক। অবশেষে সেই চাওয়া পূরণ হয়েছে।
ফরহাদ হোসেনকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে মেহেরপুরে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। সর্বত্র উচ্ছ্বাস। বিশেষ করে ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন দেওয়া স্ট্যাটাস দিচ্ছেন জেলাবাসী।
ফরহাদ হোসেন টানা দ্বিতীয়বারের মতো এই আসনে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী জেলা বিএনপির সভাপতি মাসুদ অরুণ। মাসুদ অরুণের বাবা আহমেদ আলীও দুই বার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। ফরহাদ হোসেনের বাবাও সাংসদ ছিলেন। এবারের নির্বাচনে মাসুদ অরুণ জামানত খুইয়েছেন। ফরহাদ হোসেন তাঁকে ১ লাখ ৭০ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। মাসুদ অরুণ মাত্র ১৪ হাজার ১৯২ ভোট পেয়েছেন। এই আসনে এত ব্যবধানে এর আগে কখনো কোনো প্রার্থী পরাজিত হননি।
২০০৮ সালে মাসুদ অরুণকে পরাজিত করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়নাল আবেদীন। ২০১৪ সালে প্রয়াত নেতা সহিউদ্দিনের ছেলে ফরহাদ হোসেনকে মনোনয়ন দেয় দলটি।
সদর উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের রতন আলী বলেন, কৃষিনির্ভর এলাকাতে উন্নয়ন সাধন করতে হলে কৃষির ওপরে জোর দিতে হবে। স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর হলেও ঐতিহাসিক মেহেরপুরে একজন মন্ত্রী পেয়েছে। এবারে সেই কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের মাত্রা বাড়বে।
জেলা উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি রফিকুল আলম বলেন, এলাকার উন্নয়নে ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে তরুণ প্রজন্মর সামনে তুলে ধরে আরও বিকশিত করতে একজন মন্ত্রী পর্যায়ের সাংসদের বিকল্প নেই। কৃষিনির্ভর জেলায় মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের। তিনি বলেন, সাংসদ ফরহাদ হোসেনকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়ায় মুজিবনগরের সম্মান বৃদ্ধি হয়েছে।
মেহেরপুর সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল আমিন বলেন, জেলাটি মূলত কৃষিনির্ভর। এখানে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। স্থলবন্দরের দাবিতে দীর্ঘ সময় ধরে আন্দোলন করছে জনগণ। শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে না ওঠায় বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে না। এবারে সাংসদ ফরহাদ হোসেন মন্ত্রী হওয়াতে বেশির ভাগ সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
মন্তব্য
মন্তব্য করুন প্রথমআলো.কম এ
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
০৭ জানুয়ারী, ২০১৯
স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরে মন্ত্রী পাচ্ছে মেহেরপুর ... তাও রাইতের ভোটে!!
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
০৮ জানুয়ারী, ২০১৯
যেভাবেই জিতুক আমাদের মেহেরপুর মন্ত্রী পেয়েছে অবশেষে। নিন্দুকেরা অনেক কথা বলবেই। বিএনপির ঘাটি থেকে এভাবে জিতে আসা অনেক কিছু। এবার আশা করি কিছুটা হলেও উন্নতি দেখা যাবে- এই গরীব এলাকার। অভিনন্দন।