যাত্রা শুরু করেছে একাদশ জাতীয় সংসদ। আজ বুধবার বিকেল ৩টায় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। সরকারের গঠনমূলক সমালোচনার মধ্য দিয়ে এই সংসদ প্রাণবন্ত ও কার্যকর হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে সরকারি ও বিরোধী দল।
আজ বিকেলে বৈঠকের শুরুতে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন করা হয়। এ দুটি পদে পরিবর্তন আসেনি। শিরীন শারমিন চৌধুরী টানা তৃতীয় মেয়াদে স্পিকার নির্বাচিত হয়েছেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। আর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আবারও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হন ফজলে রাব্বী মিয়া।
সংসদের এই দুই পদে পরিবর্তন না এলেও চিফ হুইপ পদে এবং হুইপের তিনটি পদে নতুন মুখ এসেছে।
নব নির্বাচিত স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সংসদে সব দলের সদস্যরা যাতে সমান সুযোগ পান সেটা দেখতে হবে। সরকারি দল এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সমালোচনা সব সময় গুরুত্বপূর্ণ। বিরোধী দল যথাযথভাবে সরকারের সমালোচনা করতে পারবে। এখানে কোনো বাধা দেওয়া হবে না।।
চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে থাকায় প্রথম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না বিরোধীদলীয় নেতা এইচ এম এরশাদ। তাঁর অনুপস্থিতিতে বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহম্মদ কাদের বলেন, জনগণের পক্ষে কথা বলতে বিরোধী দলকে প্রত্যাশা অনুযায়ী সময় দিতে হবে। তাঁরা সঠিকভাবে জনগণের কথা তুলে ধরতে পারলে সংসদ প্রাণবন্ত হবে। সংসদ প্রাণবন্ত ও কার্যকর হোক তাঁরা সেটাই চান। বিরোধী দল হিসেবে সংখ্যায় কম হলেও সংসদকে কার্যকর রাখতে কোনো বাধা হবে না। বিরোধী দলের যুক্তিসংগত কথাগুলো শুনে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিলে সংসদের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে।
সংসদে জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, সংসদকে প্রাণবন্ত করতে তাঁরা চেষ্টা করবেন।
আজ বিকেলে বৈঠকের শুরুতে স্পিকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্পিকার পদে শিরীন শারমিনের নাম প্রস্তাব করেন। প্রস্তাব সমর্থন করেন নবনিযুক্ত চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী। আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় কণ্ঠভোটে সর্বসম্মতভাবে স্পিকার নির্বাচিত হন শিরীন শারমিন চৌধুরী।
সংসদ ভবনে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ নতুন মেয়াদে স্পিকার হিসেবে শিরীন শারমিনকে শপথ পড়ান।
এরপর শিরীন শারমিনের সভাপতিত্বে মুলতবি বৈঠক শুরু হয়। নিয়ম অনুযায়ী এরপর ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন কর হয়। সাংসদ আতিউর রহমান ডেপুটি স্পিকার পদে ফজলে রাব্বী মিয়ার নাম প্রস্তাব করেন। এটি সমর্থন করেন হুইপ ইকবালুর রহিম। আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় কণ্ঠভোটে ডেপুটি স্পিকার পদে ফজলে রাব্বী মিয়া নির্বাচিত হন। পরে সংসদ ভবনে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ডেপুটি স্পিকারকে শপথ পড়ান।
পরে গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের সংশোধনীসহ ৫টি অধ্যাদেশ সংসদে তোলা হয়। এরপর প্রয়াত সাংসদ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সাবেক সাংসদ খন্দকার আবদুল বাতেন, নূরুল আলম চৌধুরী, টিআই ফজলে রাব্বী চৌধুরী, নুরুল ইসলাম, আশরাফুন্নেসা মোশারফ, বোরহান উদ্দীন খানের মৃত্যুতে সংসদে শোক প্রস্তাব আনা হয়।
শোক প্রস্তাবের আলোচনায় সৈয়দ আশরাফের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত ও অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্যদের মধ্যে জাতীয় পার্টির সাংসদ রওশন এরশাদ, সরকারি দলের সাংসদ আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, আবদুর রাজ্জাক আলোচনায় অংশ নেন।
এরপর রেওয়াজ অনুযায়ী বছরের প্রথম অধিবেশনে ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
একাদশ জাতীয় সংসদে চিফ হুইপ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মাদারীপুর-১ আসন থেকে নির্বাচিত সাংসদ নূর-ই-আলম চৌধুরী। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এ নিয়োগ দিয়েছেন। একই সঙ্গে আরও ছয়জনকে হুইপ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
আজ জাতীয় সংসদ সচিবালয় এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
হুইপ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন শেরপুর-১ আসন থেকে নির্বাচিত সাংসদ আতিকুর রহমান, খুলনা-১ আসনের সাংসদ পঞ্চানন বিশ্বাস, দিনাজপুর-৩ আসনের সাংসদ ইকবালুর রহিম, গাইবান্ধা-২ থেকে নির্বাচিত সাংসদ মাহবুব আরা বেগম গিনি, চট্টগ্রাম-১২ আসনের সাংসদ সামশুল হক চৌধুরী ও জয়পুরহাট-২ থেকে নির্বাচিত আবু সাঈদ আল মাহমুদ। এর মধ্যে আতিক, ইকবাল ও গিনি দশম সংসদেও সরকারি দলের হুইপের দায়িত্বে ছিলেন।
মন্তব্য
মন্তব্য করুন প্রথমআলো.কম এ
mohammad rahman
৩০ জানুয়ারী, ২০১৯
কিভাবে প্রাণবন্ত করা যায় তার জন্যে বিরােধী দলের প্রশিক্ষণ না হলে কোন সময় কি বলে ফেলে বুঝা যাবে না তারা কােনো পক্ষ
ahmed
৩০ জানুয়ারী, ২০১৯
একদলীয়
S. M. Abdul Haque
৩০ জানুয়ারী, ২০১৯
Without real opposition the parliament will not be alive anymore.
Janab Ali
৩০ জানুয়ারী, ২০১৯
সংসদে জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, সংসদকে প্রাণবন্ত করতে তাঁরা চেষ্টা করবেন।
NAhmed
৩১ জানুয়ারী, ২০১৯
অযথা সংসদে সময় ব্যয় না কোরিয়া কিভাবে দেশের উন্নয়নের সাথে সাথে নিজের উন্নয়ন করা যায় সেদিকে মনোনিবেশ করা দরকার। নেতার উন্নয়ন মানেই দেশের উন্নয়ন।
MOHD.MUSADDIQUE CHOUDHURY
৩১ জানুয়ারী, ২০১৯
এই সংসদ কীভাবে প্রাণবন্ত হবে কারা এই আশা কীভাবে করেন...
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
৩১ জানুয়ারী, ২০১৯
পাতানো নির্বাচন কমিশন, পাতানো সংসদ, পাতানো বিরোধী দল! আর তাদের সংসদ হবে প্রাণবন্ত!!
তাসলিমা বেগম
৩১ জানুয়ারী, ২০১৯
ঘরের লাইট বন্ধ করে কেউ যদি মোমবাতি জ্বালিয়ে উজ্জ্বল আলো প্রত্যাশা করে তবে সেটা নিয়ে কোনো কথা বলার অবকাশ কি আছে?
Mohammad Ekramul Hoque
৩১ জানুয়ারী, ২০১৯
আমি কি হাসব না কি কাঁদব, বুঝতে পাচ্ছি না।