ঐক্যফ্রন্টের অস্তিত্ব খুঁজে পাচ্ছেন না কাদের সিদ্দিকী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ০৮ জুলাই, ২০১৯

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী আজ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে দুপুর সংবাদ সম্মেলন করেন। ছবি: প্রথম আলোজোটভুক্ত হওয়ার আট মাসের মাথায় এসে বিএনপির প্রতি ক্ষোভ ও ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বের সমালোচনা করে ঐক্যফ্রন্টের এখন কোনো অস্তিত্ব নেই জানালেন কাদের সিদ্দিকী। তাঁর দল কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ঐক্যফ্রন্টের চিন্তা বাদ দিয়ে নতুন উদ্যমে পথচলার ঘোষণা দিয়েছে।

আজ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে দুপুর ১২টায় এক সংবাদ সম্মেলন করে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। দলটির সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বলেন, নির্বাচনের পরে এই সাত মাস ঐক্যফ্রন্টকে খুব একটা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। জাতীয় কোনো সমস্যাতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারছে না।

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। সেখানে বলা হয়, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অস্তিত্ব বা ঠিকানা খোঁজার চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে জনগণের সব সমস্যায় তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকারে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ নতুন উদ্যমে পথচলা শুরু করছে।’ তাদের বক্তব্যে আরও বলা হয়, নির্বাচন–পরবর্তী সাত মাসে ঐক্যফ্রন্টের অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে অসমাপ্ত বৈঠক ছাড়া কোনো নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা হয়নি। এতে তাদের মনে হয়েছে, বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক জোট বা ফ্রন্ট গঠনই হয়নি।

ঐক্যফ্রন্ট ছেড়ে দিচ্ছেন কি না প্রশ্নের জবাবে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ঐক্যফ্রন্ট খুঁজে পাওয়া যায় না। তার কোনো কর্মকাণ্ড নেই। তবে জানান, তাদের লিখিত বক্তব্য সেটাই বোঝায়। ঐক্যফ্রন্টের বর্তমান অবস্থার দায় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কাদের সিদ্দিকী বলেন, দায় কমবেশি সবার।

ঐক্যফ্রন্টের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। জোটের আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের সমালোচনা করে বলা হয়, কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জোট গঠন হলেও তাঁকে তেমন সক্রিয় দেখা যায়নি। জোট গঠন হলেও মূলত জোটের অন্যতম শরিক বিএনপিকেন্দ্রিক সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন জোটের অফিস থেকে হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অফিস থেকে বিএনপির নেতৃত্বে তা হয়েছে, যা ঐক্যফ্রন্ট গঠনের নীতিমালার পরিপন্থী বলে জানায় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। এ ছাড়া জামায়াতকে একই প্রতীকে মনোনয়ন দেওয়ারও সমালোচনা করে তারা।

৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনকে জালিয়াতির নির্বাচন বলে মন্তব্য করে সংবাদ সম্মেলনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ বলে, নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে পুনর্নির্বাচনের দাবি সঠিক ছিল। তবে সে পথ থেকে সরে এসে গণফোরাম ও বিএনপির নির্বাচিতদের শপথ নেওয়ারও সমালোচনা করা হয়। এ ছাড়া মির্জা ফখরুলের শপথ না নেওয়াকে দ্বিচারিতা উল্লেখ করে বলা হয়, ‘জনগণ কোনো রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে এ রকম প্রতারণা প্রত্যাশা করে না।’

ফেনীর নুসরাত হত্যা, বরগুনার রিফাত হত্যা, কৃষকের ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়াসহ জাতীয় কোনো ইস্যুতে ঐক্যফ্রন্ট দাঁড়ায়নি বলে অভিযোগ করে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ।

গত ৯ মে সংবাদ সম্মেলন করে কাদের সিদ্দিকী ঐক্যফ্রন্ট ছাড়ার আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন। তখনো তিনি ঐক্যফ্রন্টের নানান অসংগতি তুলে ধরেন। আজ সংবাদ সম্মেলনে সে বিষয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ৯ মে তিনি জোটের সব শরিকদের চিঠি দেন। কিন্তু ৪ জুনের আগ পর্যন্ত কেউ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। ৪ জুন ড. কামাল হোসেন তাঁকে ডাকেন। এরপর ১০ জুন জেএসডি সভাপতি আ স ম রবের বাসায় কামাল হোসেন বৈঠক ডাকেন। কিন্তু সে বৈঠকে কামাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন না। তিনি না আসায় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাও সেদিন উপস্থিত হননি বলে জানান কাদের সিদ্দিকী। এ ছাড়া তিনি বলেন, সেদিন আনুষ্ঠানিক সভা হয়নি, অপ্রয়োজনীয় আলোচনা হয়েছে। এরপরে প্রায় এক মাস হতে চললেও ঐক্যফ্রন্টে কোনো সাড়া শব্দ নেই বলে জানান তিনি।

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ জানায়, সমমনা দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে তারা ঐকমত্যের ভিত্তিতে গণ-আন্দোলন করবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার, তাসনিম সিদ্দিকী প্রমুখ।

মন্তব্য

  • image

    msIqbal

    ০৮ জুলাই, ২০১৯

    জনাব, প্রথম আলোর ফ্রন্ট পেজে ৮ কলাম ১০ ইঞ্চির একটা ''সন্ধান দিন' বিজ্ঞাপন দিয়ে দেখতে পারেন!

  • image

    রাজিব

    ০৮ জুলাই, ২০১৯

    ঐক্যফ্রন্ট কিছু করতে পারছেনা -এই বক্তব্যের মাধ্যমে প্রকারন্তরে তিনি নিজের ব্যর্থতা স্বীকার করে নিলেন, কারন তিনিও ঐক্যফ্রন্টের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন।

    • image

      নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

      ০৮ জুলাই, ২০১৯

      Mr, K.Siddiqui, I have lost faith on you.

  • image

    Maruf

    ০৮ জুলাই, ২০১৯

    ফটোতে যাদের দেখা যাচ্ছে তার বাইরে কাদের সাহেবের দলে খুব বেশি লোক আছে বলে মনে হয় না। ঐক্যফ্রন্টে লেগে থাকাটা বরং সেটা ছিল তার ও তার দলের জন্য অনেক বেশি উপযোগী।

  • image

    SHAMEEM

    ০৮ জুলাই, ২০১৯

    এখন জানি, "রইল বাকি কত" ?

  • image

    suvo subbro

    ০৮ জুলাই, ২০১৯

    যখন জামাতে ইসলামীকে ধানের শীষ প্রতিক বিএনপি দিল তখন কিছু বললেন না আর এতদিন পরে সমালোচনা করছেন।আপনারা আসলে কি চান তা আমরা সাধারণ জনগণ কোন দিনই বুজতে পারবো না।

  • image

    আন্দালিব

    ০৮ জুলাই, ২০১৯

    একে একে নিবিছে দেউটি-- ভেজাল মসলার খাবারে বদহজমই হয়, একসময় সবাই তা উগড়ে ফেলে।

  • image

    roman khan

    ০৮ জুলাই, ২০১৯

    এরা কে?

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ০৮ জুলাই, ২০১৯

    ঐক্যফ্রন্ট গড়ে তোলার ক্ষেত্রে নিজের ভূমিকা কতোটুকু ইতিবাচক ছিল, তা নিজের কাছে প্রশ্ন করে উত্তরটি খুঁজে নিলে, ঐক্যফ্রন্টের ঠিকানা খোঁজার প্রয়োজন হবেনা।

  • image

    MD.ABDUR RAHMAN

    ০৮ জুলাই, ২০১৯

    কাদের সিদ্দিকী আপনি কি জানেন না ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের নামে দেশে কি প্রতারণাটাই না করেছে আওয়ামী লীগ? ঐক্যফ্রন্টকে দেয়া কোন কথা কি রেখেছে সরকার? ওই নির্বাচনে ভোট দিতে না পেরে দেশের মানুষ কতটা কষ্ট পেয়েছে তা কি আপনি জানার চেষ্টা করেছেন? আজ আপনি চটকদার কিছু কথা বলে ঐক্যফ্রন্ট ছাড়ছেন, এতে ঐক্যফ্রন্টের কোন ক্ষতি হবে না, জনগণেরও কোন ক্ষতি হবে না, আপনার এই অবস্থান ভোট নিয়ে প্রতারণাকারীদের মুখেই কিছুটা হাসি ফুটিয়েছে মাত্র।

  • image

    Sohel S.parvez

    ০৮ জুলাই, ২০১৯

    আপনার ছবি এখন আর পত্রিকায় দেখা যায় না!!কি আর করবেন?এরকম সংবাদ সম্মেলন মাঝে মাঝে করেন,পত্রিকায় ছবি আসবে।নিজের মেয়েকে নিয়ে ধানের শীষ মার্কা লাগিয়ে দিলেন!!ইতিহাসের কাছে আপনাকে জবাব দিহি করতেই হবে একদিন।ডঃ কামাল সাহেব অতিশয় বৃদ্ধ মানুষ।তাকে ছেড়ে দেন প্লিজ।কিছুদিন চুপচাপ থাকেন।পনেরোই আগষ্টে বঙ্গবন্ধু ভবনে যান।ঐ জায়গা তো কেউ আপনার জন্য বন্ধ করেনি।

  • image

    mohammad rahman

    ০৮ জুলাই, ২০১৯

    ক দিন পর নিজেরই অস্তিত্ব খুঁজে পাবেন না

  • image

    Hamidur

    ০৮ জুলাই, ২০১৯

    তোমরা সবাই বিএনপিকে ধবংস করে এখন এখজন একজন পালিয়ে যাচ্ছ। মনে রেখো বিএনপি কিন্তু পূর্ণ শক্তি নিয়ে ফিরে আসবে আবার। কথা আছেনা আদা পচলেও গ্রাণ যায়না

    • image

      নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

      ০৮ জুলাই, ২০১৯

      ফরমালিন দেয়া ফল কি কখনো পঁচে, কিন্তু খেলে জীবন বাঁচেনা।

  • image

    M Halim

    ০৮ জুলাই, ২০১৯

    ছবির চারজনের বাইরে উনার দলে আরো কোন সদস্য আছে কি?

  • image

    এছলাম সরকার

    ০৮ জুলাই, ২০১৯

    কৃষক শ্রমিক জনতা লীগকে খুঁজতে হবে। তাদের ঠিকানা কি?

  • image

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

    ০৮ জুলাই, ২০১৯

    কৃষক শ্রমিক জনতা লীগও ঐক্যফ্রন্টের শরিক দল।কাদের সিদ্দিকী হঠাত এত কথা বলছেন তাহলে ঐক্যফ্রন্টে থেকে আপনার বা আপনার দলের এতদিন কি ভূমিকা ছিল? কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের অস্তিত্বই বা কোথায় ছিল? নাকি কাদের সিদ্দিকী ব্যস্ত ছিলেন আরেক লীগের সাথে দরকষাকষি করতে!

  • image

    Shafiq

    ০৮ জুলাই, ২০১৯

    Good news.

  • image

    A.K.M.OBAIDULLAH

    ০৮ জুলাই, ২০১৯

    ঐক্য ফ্রন্ট হলো একটা নির্বাচনী জোট । নির্বাচনের পর বিশেষ করে নির্বাচিত সাংসদদের শপথ নেয়ার মাধ্যমে ওই জোটের স্বাভাবিক মৃত্যু ঘটেছে।

সব মন্তব্য